
Home ঝিনাইদহ জেলা / Jhenidah District > নলডাঙ্গা ভুষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৬৯)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 16488 বার পড়া হয়েছে
নলডাঙ্গা ভুষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৬৯)
কালিগঞ্জ উপজেলার প্রাণকেন্দ্র্রে পত্র পল্লবে শোভিত এক নৈসর্গিক পরিবেশে নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ৫.১২১/২ একর জমির উপর ১৪ কক্ষ বিশিষ্ট দ্বিতল মনোরম ভবন, পাকা একতলা ভবন, সেমি পাকা ভবন ও বৃহৎ খেলার মাঠ নিয়ে অবস্থিত। প্রয়াত রাজা প্রমথ ভূষণ দেবরায় ১৮৬৯ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। রাজা প্রমথ ভূষণ দেব একজন বহুগুণ বিশিষ্ট বিদ্বগ্ধ মনীষী ছিলেন।
১৮৬৯ সালে এম, ই (মধ্য ইংরেজী) স্কুল হিসাবে নলডাঙ্গার রাজা প্রথম ভূষন দেবরায় তাঁর নিজস্ব বাড়ি গঞ্জানগরে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম বিদ্যালয়টির শ্রেণী কার্যক্রম শুরু হয় রাজবাড়ির একটি পাকা ঘরে এবং দুইটি সেমি পাকা গৃহে। এই স্কুলটির আর্থিক সাহায্য নলডাঙ্গার রাজ এস্টেট থেকে দেয়া হত। বিদ্যালয়টি দীর্ঘ দিন এই সাহায্য লাভের পর ১৯৪৮ সাল থেকে এই সাহায্য হতে বঞ্চিত হয়। ১৯৫৭ সালে স্কুলটি প্রথম সরকারী অনুদান লাভ করে। ১৯৩৪ সালে বিদ্যালয়টিকে নলডাঙ্গার রাজবাড়ি হতে কালীগঞ্জের বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়। স্কুলের বর্তমান জায়গা, আসবাব পত্র প্রভৃতি রাজা প্রথম ভূষন দেব কর্তৃক দানপত্র করে দেওয়া হয়। স্কুলটির খেলার মাঠের জন্য ২ একর ১৬ শতক জমি দান করেন বালিদা পাড়ার মহেন্দ্রনাথ সরকার। ১৮৮২ সালে বিদ্যালয়টি উচ্চ ইংরাজী বিদ্যালয় হিসাবে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্থায়ীভাবে অনুমোদন লাভ করে। উচ্চ ইংরাজী স্কুলটির প্রথম প্রধান শিক্ষক হিসাবে যার দান অবিশ্বরণীয় তিনি হলেন অভয় কিরণ মুখার্জী।
বিদ্যালয়টি ১৮৮২ সালে ১০ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহ মহকুমা প্রশাসক সি, এম, কে, গাঙ্গুলী প্রথম পরিদর্শণ করেন। ১৮৯৫ সালে প্রেসিডেন্সী বিভাগের বিভাগীয় স্কুল পরিদর্শক খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ স্কুলটি পরিদর্শন করে কোন মুসলিম ছাত্র ও শিক্ষক না দেখে খুব আপত্তি জানান। ঐ সময় হতে পর্যায়ক্রমে তিনজন মুসলিম শিক্ষককে নিয়োগ প্রদান করা হয়। এরা হলেন মৌলবী দলিল উদ্দীন আহম্মেদ, মৌলবী রায়হান উদ্দীন আহম্মদ ও মৌলবী ছদর উদ্দীন আহম্মদ। এই সময় বিদ্যালয়টিতে কিছু মুসলিম ছাত্রের আগমন লক্ষ্য করা যায়। প্রাচীন এই বিদ্যালয়ে বহু প্রখ্যাত শিক্ষকগণ শিক্ষকতা করেছেন। তাঁদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য প্রধান শিক্ষকগণ হলেন, রাখাল দাস চক্রবর্তী, মৃনাল কান্তি সরকার, পূবান চন্দ্র সরকার, অপূর্ব কিরণ চৌধুরী, প্রফুল্ল কুমার সরকার, মৌলবী আজাহার আলী খান বিশেষ স্মরনীয়। দীর্ঘদিন যাবৎ বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন বিশ্বাস আব্দুর রহিম। দীর্ঘদিনের এই বিদ্যালয়টি নলডাঙ্গার রাজ পরিবারের পৃষ্ঠপোষকাতা, পরবর্তীতে স্থানীয় বিদ্যানুরাগী ব্যক্তিবর্গ ও সরকারের সহযোগিতা এবং শিক্ষকদের বিশেষ অবদানে আজকের পর্যায়ে উন্নীত হতে সক্ষম হয়েছে। বিদ্যালয়টি একটি প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
তথ্য সূত্র:
শিক্ষালয়ের ইতিকথায় যশোর
লেখক: কাজী শওকত শাহী
সম্পাদনা:
মোঃ হাসানূজ্জামান বিপুল
শামিউল আমিন শান্ত