
Home রাজনীতিবিদ / Politicians > আলমগীর সিদ্দিকী / Alamgir Hossain (1926-1977)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 18174 বার পড়া হয়েছে
আলমগীর সিদ্দিকী / Alamgir Hossain (1926-1977)
আলমগীর সিদ্দিকী
Alamgir Hossain
Home District: Jessore

প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, ভাষাসৈনিক ও ক্রীড়া সংগঠক আলমগীর সিদ্দিকী ১৯২৬ সালের ৪ডিসেম্বর যশোর শহরের কেন্দ্রস্থল চুড়িপট্টিতে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হাজী করিম খানের চতুর্থ সন্তান। মাতার নাম --------। ----------ভাই বোনের মধ্যে আলমগীর সিদ্দিকী -----।
শিক্ষাজীবন:...........
রাজনৈতিক জীবন:
ভারত বিভাগের পর যশোরে সেই সময়ে যারা প্রগতিশীল ছাত্র ও যুব আন্দোলনে এবং সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোভাগে থেকে একটা নতুন মূল্যবোধের সৃষ্টি করেছিলেন তাদের মধ্যে আলমগীর সিদ্দিকী, আফছার সিদ্দিকী, আফজাল হোসেন, শরীফ হোসেন, গোলাম রব্বানী, আজীজ খান, কাসেম, মোরশেদ, শাহানা মহিউদ্দীন, শামসুল আলম, নুরুল হক প্রমুখ বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আলমগীরের ভূমিকা সর্বাধিক উজ্জ্বল হলেও যুব আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
যশোরের প্রগতিশীল এবং অসমপ্রদায়িক রাজনীতির অঙ্গনে আলমগীর সিদ্দিকী ছিলেন এক উজ্জ্বল তারকা। এক রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম নিয়েও যশোর জিলা স্কুলে ১২ বছর বয়সে দশম শ্রেণীতে পড়াকালীন তিনি মুসলিম ছাত্রলীগের সাথে জড়িত হন।
তাঁর রাজনৈতিক চেতনা, কর্মকান্ড ও শ্রেণীগত অবস্থান তাঁর পারিবারিক পরিবেশের সাথে মোটেই সামঞ্জস্যশীল ছিলনা। স্বাভাবিকভাবেই একটা ভোগ বিলসী উচ্ছৃঙ্খল ছেলে হিসেবে তাঁর গড়ে উঠার কথা। কিন্তু তা তিনি হননি। হয়েছিল ঠিক তার উল্টোটাই। হতভাগ্য ও নির্যাতিত মানুষের মুক্তির মন্ত্রে নিজেকে দিক্ষিত করে তিনি নিগ্রহ ও দূর্ভেগের পথকেই বেঁছে নিয়েছিলেন। এখানেই আলমগীরের মহত্ত্ব।
১৯৪৪ সালে তিনি কমিউনিস্ট আন্দোলনে যোগদেন। ১৯৪৭ সালে যশোর এম. এম কলেজে অধ্যয়নকালে ঐ দলের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন তিনি। তাঁর পার্টির কর্মকান্ড ছিল সামান্তবাদী শ্রেণীর বিরুদ্ধে ও কৃষক শ্রেণীর সঙ্গে। পুঁজিবাদী শ্রেণীর প্রতিক্রিয়াশীল স্বৈরাচারী শক্তির বিরুদ্ধে নির্যাতীত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সঙ্গে তাই তিনি আঁতাত গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছিলেন। চেষ্টা করেছিলেন সমাজের এইসব সংখ্যা গরিষ্ঠের এক সম্মিলিত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে। তিনি চেয়েছিল তাঁর ইষ্পিত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় থাকবে না কোনও বিত্তবানের অনাচার, দুর্নীতি, কুসংস্কারাচ্ছান্ন, সামপ্রদায়িকতা, বর্ণবিদ্বেষ ও গোত্রবাদী রেষারেষী। উৎপাদন বিলিবন্টনের মধ্যে থাকবেনা কোন অসমতা। দল মত ব্যক্তি নির্বিশেষে সকলের থাকবে সমান নাগরিক অধিকার, বাকস্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রতিবাদ-ধর্মঘট করার অধিকার। এক অনির্বচনীয় গণতান্ত্রিক পরিবেশের মধ্যে সকলের জীবনে থাকবে নিরাপদ, স্বাধীন সার্বোভৌমত্ব।
শুধু যশোরেই নয় সারা বাংলাদেশে সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ বিরোধী যে চেতনা কোটি কোটি মানুষের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম আজকের বাংলাদেশের জন্মদান করেছে সেই মহা সংগ্রামেরই অন্যতম নায়ক আলমগীর সিদ্দিকী। তাঁর মৃত্যুর পূর্বমুহুর্ত পর্যন্তও সমাজের নিম্ন শ্রেণীর মানুষের রুটি-রুজির জন্য সংগ্রামে সামিল হয়েছেন, এই সব খেটে খাওয়া মানুষের পাশে তিনি আজীবন কাটিয়েছেন এবং বিদ্রোহের পতাকা সর্বদা সমুন্নত রেখেছেন।
আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকেও আলমগীর ও অন্যান্য তরম্নণরা মিলে পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি, সিয়াটো ও সেন্টো চুক্তির বিরম্নদ্ধে যশোরে সফল আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। আলমগীর মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন যে মানবতার সবচেয়ে বড় শত্রু বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদ। আর এ সাম্রাজ্যবাদের কারণে দারিদ্র, ক্ষুধা, ব্যাধি ও মৃত্যু। সাম্রাজ্যবাদকে এদেশ থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করতে না পারলে এ দেশের মুক্তি নেই। তাই তাঁর সমস্ত রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মূল উদ্দেশ্য ছিল এটাই।
১৯৫২ সালে যশোর যুবলীগের শাখা গঠিত হবার পর আলমগীর, গোলাম রব্বানী, মোঃ শরীফ হোসেন, মোরশেদ শাহানা, নূরুল ইসলাম দত্ত ও নুরুল হক খুব অল্প সময়ের মধ্যে যশোরে শক্তিশালী যুব সংগঠন গড়ে তোলেন। তিনি সমগ্র পূর্বপাকিস্তান মুসলিমলীগের সংগঠক ছিলেন। কিন্তু তৎকালীন এই মুসলিম লীগ আস্তে আস্তে প্রতিক্রিয়াশীল ও গণবিরোধী রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়লে তিনিও ধীরে ধীরে প্রগতিশীল ও অসমপ্রদায়িক রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়তে থাকেন। এই মুসলিম ছাত্র লীগেরই একটা প্রগতিশীল অংশ নিয়ে তিনি তৎকালীন প্রতিটি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশ নিতে থাকেন। এই সময় তিনি সম্রাজ্যবাদ বিরোধী বামপন্থী জোটে শরীক হন। এরপর থেকে তিনি যশোরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সাম্রাজ্যবাদ জোটের সামগ্রিক নেতৃত্ব দান করেন। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি আওয়ামী লীগের সদস্য হন এবং যুক্তফ্রন্ট আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেন। এই সময় তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকার যশোর জেলার দুইজনের নামে হুলিয়া জারী করে। এই দুইজন হচ্ছে জনাব আলমগীর সিদ্দিকী ও কমিউনিষ্ট নেতা আব্দুল হক। শুধু হুলিয়া জারী করেই ক্ষান্ত হয়নি, তৎকালীন সরকার তাঁদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পাঁচ হাজার টাকা পুরষ্কারও ঘোষণা করে।
আওয়ামী লীগের সদস্য থাকাকালীন তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেখ মুজিবর রহমানের একজন ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ছিলেন। তারপর রাজনৈতিক মতভেদ শুরু হয় ১৯৫৭ সালে। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) গঠন করলে তিনিও তখন আওয়ামী লীগ ছেড়ে ন্যাপে যোগদান করেন। মৃত্যুর আগমুহুর্ত পর্যন্ত এই রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন ন্যাপের প্রতিষ্ঠা কর্মী ও মাওলানা ভাসানীর এক ঘনিষ্ট সহচর। ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের সময় যশোরে তিনি এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। মওলানা ভাষানী আলমগীরকে নিজের ছেলের মতোই ভালবাসতেন। যেকোন সংকটে তিনি তাঁকে ডেকে পাঠাতেন। এমনকি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে যেয়েও তিনি আলমগীরকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিসত্মান সরকার মাওলানা ভাসানীর সঙ্গে যে কয়েকজন ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করেছিলেন তাঁর মধ্যে আলমগীর সিদ্দিকীর নাম ছিল।
সর্বশেষে ১৯৭৬ সালে ভারত কর্তৃক গঙ্গার পানির একতরফা বন্টনের প্রতিবাদে ঐতিহাসিক ফারাক্কা মিছিলের একজন অন্যতম সংগঠক ছিলেন আলমগীর সিদ্দিকী। তিনি ছিলেন আজীবন সংগ্রামী।
ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ:
১৯৪৮ সালের যশোরেও তীব্র আন্দোলনে গড়ে ওঠে। ১৯৪৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারী আমলগীর সিদ্দিকীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয় এক অনির্ধারিত সভা। এ সভার সিদ্ধান্ত মতে ২৮ ফেব্রুয়ারী মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ের এল. ভি. মিত্র লেকচার হলে নেতৃস্থানীয় ছাত্রদের আর একটি সভার আয়োজন করা হয়।
ঢাকায় সেসময়ে প্রকাশ্যে শুরু হয়েছে আন্দোলন। ২৮ ফেব্রুয়ারীর সভায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উল্লেখসহ বাংলাকে রক্ষার দৃপ্তশপথ নিয়ে বক্তব্য রাখা হয় এবং রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। আলমগীর সিদ্দিকী ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলন সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক মনোনীত হন। সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ছিলেন হামিদা রহমান, সৈয়দ আফজাল হোসেন, আফছার সিদ্দিকী, নাজিমউদ্দীন, হায়বতুলস্নাহ জোয়ার্দার, কাজী আবদুর রউফ (তমদ্দুন মজলিস) প্রমুখ। যশোরে ভাষা আন্দোলন প্রথম পালিত হয় ২রা মার্চ।
ভাষার দাবিতে যশোরবাসী চুড়ান্তভাবে সংগ্রামমুখর হয়ে ওঠে। যশোরের আন্দোলন ক্রমেই জঙ্গিরূপ ধারণ করে। সাধারণ মানুষের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহণও বাড়ে দিন দিন। ১৯৪৮ সালের ১৩ মার্চ। ঐদিন সকাল ৮টার মধ্যেই কলেজ প্রাঙ্গণে সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে। আলমগীর সিদ্দিকী, আফসার সিদ্দিকী, হয়বতুল্লাহ জোয়ার্দার ছাড়াও মিছিলে নেতৃত্ব দেন গোলাম ইয়াজদান চৌধুরী রায়, রফিকউদ্দিন, শামসুল আলম, শেখ আমান উল্লাহ, আমিন আহমেদ, আবুল হাসেম প্রমুখ। হামিদা রহমান ভাষা-আন্দোলনে মেয়েদের নেতৃত্ব দেন। তাঁকে সাহায্য করেন রুবী আহমেদ এবং সুফিয়া খাতুন। কোতয়ালি থানার ওসি জব্বার ও কয়েকজন দারোগা মিছিলটি কালেক্টরেটের দিকে যেতে না দেয়ার জন্য শুরু করে পুলিশের নির্বিচারে লাঠিচার্জ। মিছিলকারীরা ইট-পাটকেল ও ডাবের খোসা ছুড়তে থাকে পুলিশের উদ্দেশ্যে। প্রবল ইট নিক্ষেপের মুখে টিকতে না পেরে পুলিশ কলেক্টরেট ভবনের উত্তর পাশ থেকে পূর্ব পাশে ট্রেজারির কাছে অবস্থান নেয়। এ সময় জনতার একটি অংশ আকষ্মিকভাবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কক্ষে ঢুকে পড়ে। এভাবে জনতা পুলিশ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে ইটের খন্ডের আঘাতে ওসি জব্বারের কান ছিড়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ধরাধরি করে কোর্ট দারোগার কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত হয় আরও বহু পুলিশ। ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অপরাধে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে পুলিশ বিক্ষিপ্তভাবে গুলি বর্ষণ শুরু করে। পায়ে গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রনেতা আলমগীর সিদ্দিকী। মিলিককারীরা ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে পড়ে। পরদিন শহরে হরতাল পালিত হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলতে থাকে অবিরাম ধর্মঘাট। ১৯৪৮ সালে যশোরে প্রথম রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে তৎকালীন স্বৈরাচার সরকারের র্ব্বর পুলিশ বাহিনীর গুলিতে আহত হয়ে বাংলাদেশের প্রথম যে মানুষটি যশোরের মাটিকে রক্তসিক্ত করেছিলেন বাংলা মায়ের সে মহান সন্তান আলমগীর সিদ্দিকী সেদিন তিনি ক্লান্ত বা ভগ্নহৃদয়ের শিকারে পরিণত না হয়ে যশোরের তৎকালীন সংগ্রাম রাজনীতির কেন্দ্রস্থল ট্রেডিং ব্যাংক ময়দানে বজ্র নির্ঘোষে আওয়াজ তুলেছিলেন “মায়ের ভাষায় কথা বলা ত”তে অপরাধ কি ? সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালী মায়ের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করব।
পুলিশ সেদিন শুধু গুলি চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, সবার নামে হুলিয়া জারি করে। নিরম্নপায় হয়ে সিদ্দিকী গা-ঢাকা দিলেন। প্রশাসনের চাপ থেকে রক্ষা পেতে তাঁর পিতা জনাব হাজী করিম সাহেব ছেলেকে হাজির করার প্রতিশ্রুতি দিলেন। পিতার নির্দেশে আলমগীর সিদ্দিকী ভারত থেকে গোপনে ঢাকা হয়ে যশোর বিমান বন্দরে পৌঁছান। বিমান থেকে নামার সাথেই জনতা ফুলের মালা নিয়ে স্বাগত জানাতে গেলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নিক্ষেপ করে। কারাগারের ছোট একটি সেলে তাঁকে আবদ্ধ রাখা হয়। নির্যাতনের লক্ষ্যে তাঁর মাথার উপর উচ্চশক্তির বাল্ব জ্বেলে রাখা হতো। তাঁকে খেতে দেয়া হতো সামান্য পরিমাণ। তবুও তিনি অন্যায় ও অসত্যের কাছে নতি স্বীকার করেননি। এভাবে প্রায় এক বছর কারাগারে নির্যাতিতজীবন কাটে তাঁর। অবশেষে হাজী সাহেব মুচলেকা দিয়ে ছেলেকে মুক্ত করেন। জেল থেকে মুক্তির পর সংসারী হতে না পেরে আবার সংগ্রামী জীবনে ফিরে গেলেন। প্রশাসনের কু-নজর থেকে রক্ষা পাবার জন্য বাড়ী ছেড়ে আত্মগোপনে গেলেন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে যশোরে তিনি সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। এ সময় তিনি যশোরের ‘সাংস্কৃতিক পরিষদ’ গঠন করে ‘ইশারা’ পত্রিকা প্রকাশ করার বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেন। ঢাকার রাজপথ ছাত্রদের রক্তে রঞ্জিত হওয়ার পর বিল্পবী চেতনার পীঠস্থান যশোরে যে ব্যাপক বিষ্ফোরণ ঘটে তাঁর বারুদ জুগিয়েছিলেন যারা আলমগীর তাদের প্রধান। ১৯৪৮ সালের ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের সূচনা থেকে ১৯৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত বাংলাদেশের যে রক্তঝরা ইতিহাস এই ইতিহাসের এক অমর সেনানীর নাম আলমগীর সিদ্দিকী।
ক্রীড়া উন্নয়নে ভূমিকা:
আলমগীর সিদ্দিকী শুধু রাজনৈাতিক নিয়েই মেতে ছিলেন না, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের একজন অন্যতম বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক, সর্বজন প্রিয় এবং এককালের খ্যাতিমান ফুটবল খেলোয়ার। তিনি যখন যশোর জিলা স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র তখন থেকেই ফুটবল খেলতে শুরু করেন। সেন্টার ফরোয়ার্ড, সেন্টার হফ ও লেফট আউট ভাগেই তিনি খেলতে দক্ষ ছিলেন। তরপর খেলার সাথে সাথে ক্লাব সংগঠন করাতেও তিনি কৃতিত্বের পরিচয় রেখেছিলেন। বুনো বাগদীদের নিয়ে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যশোরে ফুটবল টীম গঠন করলেন। তিনি কলকাতা জর্জ টেলিগ্রাফ ভাবনীপুরের টীমে, বালি প্রতিভা টীমে, যশোর প্রথম বিভাগ যতীন্দ্রমোহন ক্লাব (জে, এম, সি), ঢাকা প্রথম বিভাগ, রাজশাহী বিভাগীয় দলে এবং যশোর ঐতিহ্যবাহী টাউন ক্লাবসহ বহু দলে অসামান্য ক্রীড়া নৈপূন্য প্রদর্শন করে আপামর ক্রীড়ামোদীদের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। দেশ বিভাগের পর পরই তিনি যশোরে এভারগ্রীন ফুটবল দল গঠন করেন।
তিনি শৈশব থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন খেলাধুলার সাথে জড়িত ছিলেন। তাঁর অনুপ্রেরণায় ও উৎসাহে কত অজানা ছেলে দেশের খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদ পরিণত হয়েছে তাঁর ইয়াত্তা নেই। যশোরে তথা দেশের আপামর ক্রীড়ামোদী ও ক্রীড়াবিদদের কাছে তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়। উজ্জ্বল প্রতিভার আলমগীর সিদ্দিকী খেলার মাঠে উপস্থিত না থাকলে ক্রীড়ামোদীদের কাছে মনে হতো যেন মাঠ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। তিনি দলের অধিনায়ক ও ম্যানেজার হয়ে টীমের প্রতিটি খেলোয়াড়কে অনুপ্রেরণা ও নির্দেশ দিয়েছেন। খেলাধূলার ব্যাপরে রাতদিন পরিশ্রম করার পরও তাঁকে কোনদিন ক্লান্ত হতে দেখা যায়নি। খেলাধুলার ব্যাপারে দূর্নীতি তিনি একেবারেই পছন্দ করতেন না। তাঁর মন ছিল একদিকে ফুলের মত কোমল আর অন্যদিকে বজ্রের মত কঠিন অর্থাৎ অন্যায়ের কাছে কোনদিন তাঁকে মাথানত করতে দেখা যায়নি। তিনি রাজনীতিবিদ ছিলেন সত্য কিন্তু জীবনে তিনি রাজনীতি ও খেলাধুলা পাশাপশি সমানভাবে চালিয়ে গেছেন। রাজনৈতিক মঞ্চে তিনি ছিলেন একজন জনদরদী তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন রাজনীতিবিদ আর খেলার মাঠে তিনি ছিলেন একজন প্রতিভাবান দক্ষ খেলোয়ার, সংগঠক ও প্রশিক্ষক। রাজনীতির প্রভাব তিনি খেলার মঠে কোনদিনই দেখান নি, আবার খেলোয়াড় সুলভ মানোভাব তাঁর রাজনৈতিক মঞ্চেও প্রকাশ পায়নি। আলমগীর সিদ্দিকীর জীবনে এই দুটি দিক সত্যি একটি দর্শনীয় ব্যাপার ছিল।
তিনি বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের এবং বিভাগীগ ক্রীড়াবোর্ডের সদস্য ছিলেন। খেলাধুলার নিয়ম-কানুন সম্পর্কে তাঁর অপরিসীম জ্ঞান ছিল, তিনি ফুটবল খেলার একজন দক্ষ প্রশিক্ষক ছিলেন। রেফারী রূপেও তাঁকে খেলার মাঠে মাঝে মাঝে দেখা যেত। খেলাধুলার অনুষ্ঠানগুলি তিনি সৎ ও সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য দায়িত্ব নিজের উপর তুলে নিতেন। যে কোন ধরণের খেলাধুলার ক্রীড়াবিদদের মধ্যে আলমগীর ভাইকে না দেখতে পেলে ক্রীড়াবিদরা নিরুৎসাহ হয়ে পড়তো। খেলাধুলা ও ক্রীড়াবিদরা তাঁর জীবনের সাথে একবার অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত ছিল। নবীন খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নতমানের খেলোয়াড়ে পরিণত করতে তাঁর নিরলস পরিশ্রমের কোন অন্ত ছিল না। তিনি ১৯৬০ সালের দিকে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের লাহোর থেকে খেলাধূলার ব্যাপারে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি একাধিকবার টিমের ম্যনেজার হয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে খেলতে গিয়েছিলেন।
১৯৭৬ সালে যশোরে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের চতুর্থ জাতীয় এ্যাথলেটিকস্ প্রতিযোগিতা। তাঁর নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্য এ ধরনের একটা উন্নতমানের খেলাধুলা সঠিকভাবে সম্পন্ন হতে পেরেছিল। মাঠ ঠিক করা থেকে দর্শকদের শান্তিতে বসে খেলা উপভোগ করার প্রতি দায়িত্ব তিনি নিপুনভাবে সম্পন্ন করেছিলেন প্রতিযোগীতার উদ্বোধনী দিনে অলিম্পিক মশাল নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করার দায়িত্ব তাঁর উপরই ন্যাসত্ম করা হয়। এককালের সেরা ক্রীড়াবিদ তথা যশোরের কৃতি সন্তান আলমগীর সিদ্দিকীর অলিম্পিক মশাল নিয়ে ছুটে চলার দৃশ্য যশোরবাসীর মর্মে মর্মে উপভোগ করেছিল, সে দৃশ্য তাঁদের স্মৃতির পাতা থেকে কোনদিন মুছে যাবে না।
সামাজিক কর্মকান্ড:
আলমগীর সিদ্দিকী তাঁর জীবদ্দশায় বহু সংগঠনের সাথে যুক্ত থেকে সমাজ কল্যাণমূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। তিনি যশোর বাস মালিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও যশোর সিটি কলেজের সাংস্কৃতিক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন, মটর শ্রমিক ইউনিয়নসহ আরো অনেক সংস্থা ও সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। এক সময় তিনি যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী যশোর ইনস্টিটিউটের পরিচালক মন্ডলীর তিনি ছিলেন সাধারণ সদস্য পর্যায়ক্রমে সাধারণ সম্পাদক। যশোর স্টেডিয়ামের বিভিন্ন ভূমিকায় তিনি এক অনির্বান দীপশিখা। ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি ছিলেন কীর্তিমান, যশস্বী।
তিনি খেলোয়াড়ই ছিলেন না একা, সকলকে খেলোয়াড় করতে চেয়েছিল। তিনি নিজেই কেবল শিক্ষা দীক্ষায় পন্ডিত হতে চান নাই তিনি সকলকে পন্ডিত করার জন্য কলেজ গড়েছেন, স্টেডিয়াম গড়েছেন, সাংস্কৃতিক পরিষদ গড়েছেন, গড়েছেন সঙ্গিতালয় ও নাট্য প্রতিষ্ঠান।
আলমগীর সিদ্দিকী তাঁর ব্যাক্তিগতজীবনে বহু সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন যশোরের ঐতিহ্যবাহী “যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক”। যশোর জেলা পরিবহন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক, ঐতিহ্যবাহী জে. ডি. এস এ-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ক্রীড়া সংস্থার একজন অন্যতম সদস্য, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ভাসানী) সাধারণ সম্পাদক ও যশোর জেলা ন্যাপের সভাপতি, যশোর রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সংগঠন, খুলনা বিভাগ উন্নয়ন প্রকল্পের সদস্য এবং কুদ্দুস স্মৃতি শরীরচর্চা কেন্দ্রের উপদেষ্টা।
এসব ছাড়া তিনি অন্যান্য অসংখ্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর মত একনিষ্ঠ প্রতিভাবান নির্ভিককর্মী এবং অজীবন সমাজসেবক যশোরের বুকে জন্ম নেয়নি। তিনি ছিলেন যশোরবাসীর গৌরব। তাঁকে বাদ দিয়ে যশোরের কোন কিছুই চিন্তা করা যায় না। তিনি ছিলেন আজীবন সংগ্রামী।
বৈবাহিক জীবন: --------------------------- প্রয়োজন।
পরোলোক গমণ:
১৯৭৭ সনে ১৭ জুন শুক্রবার রাত্র ১২টায় রাজশাহী জেলার নওগাঁ মহকুমায় রাজনৈতিক সফরকালীন পিয়াসা নামক এক হোটেলে আকস্মিক বিদুৎ দুর্ঘটনায় সঙ্গীহীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন জনাব আলমগীর সিদ্দিকী। যশোর তার এক অতিপ্রিয় চির তরুণ সন্তানকে হারালো। হাজারে হাজারে মানুষ মরদেহ বরণ করতে এসেছে অবিরাম বর্ষণ উপেক্ষা করে যশোর রেল স্টেশনে। আলমগীর ভাই আসছে, অপেক্ষামান জনতা আজ ধৈর্যহারা। রিকসাওয়ালা, বাস-ট্রাক ড্রাইভার, মজুর, ভিখারী, আত্নীয় বন্ধু, জ্ঞানী-গুনি বিজয় মাল্যে ভূষিত করতে নিয়ে এসেছিল ফুলমালা আর অশ্রু। সবাই নিরব, নিস্তব্ধ। তাঁর এ ধরণের মৃত্যু সকলের মনে সন্দেহের অবকাশ রাখে।
মানুষ মানুষের কাছে কতখানি প্রিয় তা সঠিকভাবে নিরূপণ করা যায় একমাত্র মানুষটির মৃত্যুর পর। আলমগীর সিদ্দিকী যশোরে কতখানি প্রিয় ছিলেন তার প্রমান পাওয়া গিয়েছিল তাঁর মৃত্যুর পরে। তাঁর মৃত্যু সংবাদ সরকারীভাবে ঘোষিত হয়। বিকাল পাঁচটার ট্রেনে নওগাঁ থেকে যশোরে এসে পৌঁছাবে আলমগীর সিদ্দিকীর মৃতদেহ। শোকাকুল মানুষের বন্যা তখন যশোর স্টেশনের দিকে ধাবিত, পায়ে হেঁটে, রিক্সায়, ট্রাকে, বাসে, জীপে যেভাবে পারছে সবাই আসছে তাঁদের প্রিয় লোকটিকে শেষবারের মত একপলক দেখার জন্য। ট্রেন স্টেশনে পৌঁছাতে তখনও এক ঘন্টা বাকী অথচ স্টেশনে তিল ধরানো ঠাঁই নাই। সবার মুখে শব্দটি নেই, চোখে নির্বক চাহনি, ঘন ঘন দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ছে সবাই। মাঝে মাঝে ডুকরে কেঁদে উঠার শব্দ শোনা যাচ্ছে। অবশেষে ট্রেন এসে থামলো স্টেশনে। মুহুর্তের মধ্যে কাফিন নামিয়ে আনলো শোকাহত জনতা। ফুলে ফুলে ভরে গেল কাফিনের বাক্স। সমাজের সর্বস্তরের মানুষেরা এসেছে হাতে ফুল নিয়ে তাঁদের নেতাকে বরণ করে নেয়ার জন্য। মহিলা-পুরুষ, আবাল বৃদ্ধ-বনিতা, সবাই এসেছে তাঁকে এক নজর দেখবার জন্য। সমাজের যার নীচু শ্রেণীর মানুষ অষ্পৃশ্য বলে যারা পরিচিত সেই মেথরকুলের নারী-পুরুষ নিবিশেষে এসেছে হাতে ফুলভর্তি ডালা নিয়ে। ভিড় ঠেলে এগিয়ে গেল তারা, কাফিন তখন ট্রাকে উঠানো হচ্ছিলো। তারা গিয়ে বলে উঠলো “বাবু কুছ ঠেরিয়ে, হামারা আদরী লোক ফুল দেঙ্গে”।
পৌরসভার ট্রাকে মতৃদেহ তোলা হলো। ট্রাক এগিয়ে চললো চৌরাস্তার দিকে। সাথে চললো হাজার হাজার শোকাভূত মানুষের মিছিল। এই অগনিত মানুষের নীরব মিছিল দেখে যশোরের একজন বিশিষ্ট প্রবীন ব্যক্তির মুখ থেকে উচ্চারিত হলো “মুকুটহীন রাজা চলেছে তাঁর গন্তব্যস্থানে”। রাস্তার দুইধারে বাড়ীঘরগুলোর বারান্দায় ও ছাদে নারী-পুরুষ স্তব্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে তাঁদের প্রিয় লোকটির মৃতদেহ একটিবার দেখার আশায়। মানুষের স্রোত ঠেলে মরহুমের মৃতদেহ নিয়ে ট্রাকটি স্টেশন থেকে চৌরাস্তায় পৌঁছুতে প্রায় একঘন্টা সময় লেগেছিল অথচ এই পথ অতিক্রম করতে একমিনিটও লাগে না। বলা বাহুল্য এ রকম জনসমাবেশ ইতোপূর্বে কখনও যশোরে দেখা যায়নি।
মরহুমের মৃতদেহ চৌরাস্তায় পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যোর সৃষ্টি করে। তাঁর বাসভানের সামনে শোকাভূত মানুষের পদভারে প্রকম্পিত। ভিড় সামলাতে তখন পুলিশ বাহিনীও ব্যর্থ। সবাই তাদের প্রিয় নেতাকে এক নজর দেখতে চায়। উপায় না দেখে পুলিশ তখন মৃদু লাঠিচার্জ করে বিরাট লাইন করে মরহুমের মৃতদেহ এক পলক দেখার সুযোগ করে দেয়। পরদিন মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয় যশোর টাউন হল ময়দানে। এই ময়দানে তিনি শৈশবে খেলাধুলা করতেন। আবার এই ময়দানেই তাঁর শেষক্রীয় সম্পন্ন হয়। মুষলধারে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ জানাযায় হাজির হয়। তাঁর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হলো কারবালা গোরস্থানের দিকে। সেখানেই শুয়ে আছে যশোরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, কৃতি সন্তান, আজীবন সংগ্রামী, সিংহপুরুষ, এককালের খ্যাতিমান খেলোয়ার তথা যশোরবাসীর অতিপ্রিয় ব্যক্তিটি।
অন্যদিকে তাঁর মৃত্যু সংবাদ প্রচারিত হওয়ার সাথে সাথে দেশের ক্রীড়া মহলে নেমে আসে এ শোকের ছায়া। ঢাকা স্টেডিয়ামে সেদিন ছিল একটা উন্নতমানের ফুটবল খেলা। দর্শকের গ্যালারীতে তিল ধরানোর ঠাই নাই, হঠাৎ প্রচারিত হলো আলমগীর সিদ্দিকী সাহেব আমাদের মাঝে আর নেই। খেলার ক্ষিপ্রতা আর উৎসাহ কমে আসে, সঙ্গে সঙ্গে সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করে তার মরদেহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে।
যশোরবাসী তাঁর প্রতি যথাযোগ্য শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছে। তাঁর অবদানের স্বীকৃতি দিয়েছে, তাঁর বিশাল কর্মজীবনের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য স্মরণিকা প্রকাশের আয়োজনও চলেছে।
তাঁর এই অকালমৃত্যুতে শুধু যশোরের নয় জাতীয় জীবনের রাজনৈতিক ও ক্রীড়াঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। মৃত্যুর পূর্বে সে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সহকারী সম্পাদক, যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক, যশোর সিটি কলেজের সাধরণ সম্পাদক ও আরও অসংখ্য সংগঠনের নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত ছিল। তাই বার বার উচ্চারিত হয় তাঁর মৃত্যু এক শোকাবহ জাতীয় দুর্ঘটনা।
তথ্য সূত্র:
বিভিন্ন বই ও পত্র পত্রিকা
তথ্য সহযোগতিায়:
মতিন সিদ্দিকী
তথ্য সম্পাদনা:
মোঃ হাসানূজ্জামান (বিপুল)
সর্বশেষ আপডেট:
মার্চ ২০১২