
Home ঐতিহ্য (Tradition) > সরকারী অফিস- আপডেট চলছে
এই পৃষ্ঠাটি মোট 84869 বার পড়া হয়েছে
সরকারী অফিস- আপডেট চলছে
জেলা সদর হাসপাতাল:
দেশের অন্যান্য জেলার মত যশোর অঞ্চলের প্রতিটি জেলার একটি করে জেলা সদর হাসপাতাল রয়েছে। জেলার সিভিল সার্জর পদাধিকার বলে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বা সুপারিনটেনডেন্ট হিসাবে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন। যশোর-এর সদর হাসপাতালটি জেনারেল হসপিটাল নামে পরিচিত এবং এটি ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। আশির দশকের প্রথমার্ধে মহকুমাগুলোকে জেলায় উন্নীত করা হলে তৎকালীন মহকুমা হাসপাতালগুলো জেলা সদর হাসপাতালে পরিণত করা হয়। যশোর জেনারেল হাসপাতাল ২৫০ শয্যা ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ১০০। যশোর সদর হাসপাতালের জনবল প্রায় ৩০০ (প্রায় ৫০ জন চিকিৎসক কর্মকর্তাসহ) এবং ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জনবল ১০৫ (১১জন চিকিৎসক কর্মকর্তাসহ)। মাগুরা ও নড়াইল জেলাদ্বয়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল আছে। প্রত্যেকটির জনবল ৫৪ (৯জন চিকিৎসক কর্মকর্তাসহ)।
থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স:- দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অধীনে থানা পর্যায়েও হাসপাতালের ব্যবস্থা রয়েছে যা থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স/কেন্দ্র নামে পরিচিত। যশোর অঞ্চলের জেলাগুলোর প্রতিটি থানায় ৩১শয্যাবিশিষ্ট একটি করে থানা থানা কমপ্লেক্স/কেন্দ্র আছে। থানা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হচ্ছেন এ কেন্দ্রের প্রধান। তিনি একজন পেশাজীবী চিকিৎসকও বটে। অন্যান্য চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছেন (প্রতি কেন্দ্রে একজন) সার্জিক্যাল বিশেষজ্ঞ, মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ, গাইনী বিশেষজ্ঞ ও ডেন্টাল সার্জন। এছাড়া প্রতিটি থানা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কমপক্ষে দুজন মেডিক্যাল অফিসার আছেন। উল্লেখযোগ্য যে, থানা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসারের অধীনে রয়েছে একাধিক স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারী। থানার ওয়ার্ড ও লোক-সংখ্যার উপর নির্ভরশীল বিধায় এই পদগুলোর সংখ্যা এক এক থানায় এক এক রকম। এছাড়াও থানা পর্যায়ে স্বাস্থ্য কর্মী হিসাবে নিয়োজিত রয়েছে একজন স্যানিটারি পরিদর্শক।
জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস:
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রালয়ের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীনে যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল জেলায় একটি করে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস রয়েছে। একজন উপ-পরিচালক হচ্ছেন এই অফিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তাঁর সাহায্যকারীদের মধ্যে রয়েছেন একজন মেডিক্যাল অফিসার, একজন টেকনিক্যাল অফিসার ও অন্যান্য কর্মচারী। থানা পর্যায়ে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচী বাস্তবায়নের নিমিত্তে নিয়োজিত মেডিক্যাল অফিসার, থানা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাজকর্ম তদারকী করাই উপ-পরিচালকের অন্যতম দায়িত্ব।
বর্তমানে থানা স্বাস্থ্য কেন্দ্র/কমপ্লেক্স-এর পাশাপাশি ইউনিয়ন পর্যায়ে পরিবার কল্যান কেন্দ্র/উপ-কেন্দ্র এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে পল্লীস্বাস্থ্য পরিচর্যা পোস্ট (Village Health Care Post), স্যাটেলাইট ক্লিনিক (Satellite Clinic) ইত্যাদির মাধ্যমেও স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচী/কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে।
জেলা তথ্য অফিস:
তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে জেলা পর্যায়ে রয়েছে জনসংযোগ অফিস। কাজেই অন্যান্য জেলার মতো যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল জেলায়ও জনসংযোগ অফিস আছে।
তদানীন্তন বেংগল গভর্ণমেন্টের পাবলিক ইনফরমেশন ডির্পাটমেন্টের অধীনে জেলা প্রচার সংগঠক (ডিষ্ট্রিক পাবলিসিটি অর্গানাইজার)-এর একটি একটি অফিস খোলা হয় ১৯৪৪ সালে। ১৯৫৮ সালে জেলা প্রচার সংগঠক-এর পদবী পরিবর্তন করে জেলা জনসংযোগ অফিসার (ডিস্ট্রিক্ট পাবলিক রিলেশন্স অফিসার) করা হয়। সে সময় প্রতিটি মহকুমায়ও একজন করে মহকমা জনসংযোগ অফিসার (সাব ডিভিশনাল পাবলিক রিলেশন্স অফিসার)-এর পদ সৃষ্টি করা হয়। বর্তমানে তথ্য মন্ত্রণালয়ের গণযোগাযোগ (মাস কমিউনিকেশন) অধিদপ্তরের অধীনে জেলা পর্যায়ের এই অফিসের নামকরণ করা হয়েছে জেলা তথ্য অফিস। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পদবী জেলা তথ্য অফিসার। এছাড়াও থানা পর্যায়ে রয়েছে থানা তথ্য অফিসারের কার্যালয়।
১৯৪৪সালে এই বিভাগ প্রতিষ্ঠার পূর্বে ছিল একটি ন্যাশনাল ওয়েলফেয়ার ইউনিট। এই ইউনিটের দু’টি শাখা ছিলঃ চলচ্চিত্র শাখা ও চিকিৎসক শাখা। ভারত বিভাগের অব্যাবহিত আগে এই ইউনিটকে জেলা প্রচার সংগঠন (ডিস্ট্রিক্ট পাবলিসিটি অর্গানাইজেশন)-এর সংগে যুক্ত করা হয়। একীভূত অবস্থায়ও পূর্বের শাখাদ্বয়ের কার্যক্রম বহাল ছিল। একটি পাবলিসিটি ভ্যান প্রদানের মাধ্যমে চলচ্চিত্র শাখার কর্মতৎপরতা আরো জোরদার করা হয়। কিন্তু চিকিৎসা শাখার কার্যক্রম ১৯৫৪সালে পরিত্যক্ত হওয়া পর্যন্ত চালু ছিল।
জেলা পর্যায়ের বর্তমান তথ্য অফিসের প্রধান দায়িত্ব হলো শহর ও পল্লী এলাকায় প্রচার ও ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন ও দেশ গঠনমূলক কার্যক্রম সন্বন্ধে জনগনকে জানানো। এই অফিস রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার নিকট স্থানীয় গুরুত্বপুর্ণ ঘটনা/কর্মকান্ড সন্বন্ধে প্রতিবেদন বা বার্তা প্রেরণ করে থাকে। এছাড়াও এই অফিস এলাকায় কোন ভি, আই, পি-এর আগমন/ভ্রমণসূচি সন্বন্ধে জনসাধারণকে অবহিত করার ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকে। যশোর অঞ্চলের প্রত্যেকটি জেলা সদরই একটি করে তথ্য আছে। এই কেন্দ্রের সংগে রয়েছে একটি লাইব্রেরী যা ‘গণগ্রন্থাগার’ নামে পরিচিত।
জেলা খাদ্য অফিস:
বেসামরিক সরবরাহ (সিভিল সাপ্লাই) বিভাগের অধীনে জেলা পর্যায়ে খাদ্য বিভাগীয় অফিস খোলা হয় ১৯৪৩ সালে। তখন এই অফিসের নাম ছিল সিভিল সাপ্লাই অফিস। জেলা সিভিল সাপ্লাই অফিসার এই অফিসের প্রধান ছিলেন। ১৯৫৪ সালে এই অফিসটি উঠিয়ে দেওয়া হয় এবং ১৯৫৬ সালে পুনরায় স্থাপন করা হয়। তখন সিভিল সাপ্লাই বিভাগের নাম পরিবর্তন করা হয়। খাদ্য বিভাগের সংগ্রহ ও বিতরণ পরিদপ্তরের অধীনে জেলা পর্যায়ের খাদ্য বিভাগের প্রধানের পদবী করা হয় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। তখন থেকে ১৯৮২ সাল প্রতি মহকুমায় একজন করে মহকুমা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও প্রধান খাদ্য পরিদর্শক এবং প্রতি থানায় একজন করে খাদ্য পরিদর্শক নিয়োজিত ছিল।
১৯৭৫সালে তদানীন্তন সংগ্রহ, বন্টন ও রেশনিং পরিদপ্তরকে ভেঙ্গে দুটি পৃথক পরিদপ্তর সৃষ্টি করা হয়। এগুলো হল (১) সংগ্রহ পরিদপ্তর এবং (২) সরবরাহ, বন্টন ও রেশনিং পরিদপ্তর। মহকুমাগুলো জেলায় উন্নিত হওয়ায় বর্তমানে সরবরাহ, বন্টন ও রেশনিং পরিদপ্তরের অধীনে যশোর অঞ্চলে চারটি (যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল) জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস রয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সরবরাহ, বন্টন ও রেশনিং পরিদপ্তরের আওতাধীন। সংগ্রহ পরিদপ্তরের অধীনস্থ একজন অতিরিক্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে খাদ্য শস্য সংগ্রহ করার কাজে সহায়তা করার জন্য নিয়োজিত আছেন। এছাড়াও থানা পর্যায়ের খাদ্য অফিসে রয়েছেন থানা পরিদর্শক। এতদ্ব্যতীত যশোর অঞ্চলের ১৪টি স্থানীয় সরবরাহ গুদামের জন্য একজন করে ভারপ্রাপ্ত অফিসার (পরিদর্শকের পদমর্যাদাসম্পন্ন) আছে। এসব গুদাম যশোর সদর, ঝিকরগাছা, নাভারণ, নোয়াপাড়া, খাজুরা, ঝিনাইদহ, কালিগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, মাগুরা, বিনোদপুর, নড়াইল, লোহাগড়া, বড়দিয়ায় অবস্থিত। তদুপরি ৪জন উপ-পরিদর্শকের দু’জন যশোর সদরস্থ স্থানীয় সরবরাহ গুদামে, একজন ঝিনাইদহ ও একজন মাগুরায়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ অফিস:
জেলা পর্যায়ে অর্থ মন্ত্রনালয়ের অধীনন্থ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন কর অফিস, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরোর অফিস এবং জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসসহ অন্যান্য আধা-সরকারী অর্থ প্রতিষ্ঠানের অফিস রয়েছে। ট্যাক্সেশন অফিস বা কর অফিসের পূর্ব নাম কৃষি আয়কর অফিস। ১৯৬৩ সালে এর নামকরণ হয় ট্যাক্সেশন অফিস। যশোর জেলায় আয়কর অফিস স্থাপিত হয় ১৯৬৮সালে। তখন এই অফিসের প্রধান ছিলেন জেলা আয়কর অফিসের। তাঁকে সাহায্য করার জন্য ছিলেন একজন পরিদর্শক/ইনস্পেক্টর ও একজন সুপারভাইজার/তত্ত্ববধায়ক। ১৯৭৭সালে আয়কর অফিসকে ট্যাক্সেশন অফিসের সংগে যুক্ত করা হয়। বর্তমানে খুলনায় বিভাগীয় পর্যায়ের একটি আয়কর অফিস রয়েছে। খুলানায় এই বিভাগীয় অফিসের অধীনে বৃহত্তর যশোর এলাকা (যশোরম ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল) একটি আঞ্চলিক অফিসের আওতায় পড়ে। বৃহত্তর যশোর জেলাকে দু’টি আয়কর সার্কেলে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক সার্কেলে রয়েছে একজন ডেপুটি কর কমিশনার (Deputy Commissioner of Taxes D.T.C.), একজন সহকারী কর কমিশনার (Assistant Commissioner of Taxes/A.C.T), একজন অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার (Extra Assistant Commissioner of Taxes/E.A.C.T), এবং তিনজন পরিদর্শকসহ (Inspector) অন্যান্য তৃতীয় ও চতুর্থশ্রেণীর কর্মচারী।
সার্কেলে অফিসের প্রধান কাজ হল আয়কর ও সম্পদ কর নির্ধারণ ও আদায় করা। পূর্বে এই অফিসের মাধ্যমে গেইন ট্যাক্স (Gain Tax) আদায় করা (ভূমি বিক্রয়কালে) হতো। বর্তমানে গেইন ট্যাক্স সাব-রেজিষ্ট্রারের মাধ্যমে আদায় করা হয়।
শুল্ক ও আবগারী অফিস:
বৃহত্তর যশোর জেলায় শুল্ক ও আবগারী অফিস রয়েছে। ১৯৭১ পর্যন্ত এর নাম ছিল সেন্ট্রাল অ্যাক্সাইজ ও ল্যান্ড কাষ্টম্স। যশোর অবস্থিত বিভাগীয় পর্যায়ের এই অফিসের প্রধান হিসাবে কর্মরত রয়েছেন একজন সহকারী কালেক্টর। তাঁকে সহায়তা দানের জন্য রয়েছেন দু’জন তত্বাবধায়ক ও ছ’জন পরিদর্শক। এই বিভাগীয় অফিসের অধীনে বৃহত্তর যশোর জেলাকে ৩টি সার্কেলে বিভক্ত করা হয়েছে এবং এই সার্কেলগুলো হলঃ যশোর-১, যশোর-২, ও ঝিনাইদহ। প্রতিটি সার্কেলের জন্য একজন তত্বাবধায়ক এবং পাঁচ জন পরিদর্শক নিয়োজিত আছেন।
এই অফিসের প্রধান দায়িত্ব হল আবগারী ও লবণ আইন (১৯৪৪), আমদানি ও রপ্তানী নিয়ন্ত্রণ আইন (১৯৫০), বৈদেশিক মুদ্রা রেগুলেশন (১৯৪৭), শুল্ক আইন (১৯৬৯) এবং বিক্রয় কর অধ্যাদেশ (১৯৮২) এর প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানী দ্রব্যের উপর নির্ধারিত শুল্ক আদায়, সকল আমদানি দ্রব্যের উপর বিক্রয় কর আদায়, দেশে অভ্যন্তরে উৎপাদিত দ্রব্যের উপর আবগারী শুল্কের পরিবর্তে বিগত ১-৭-১৯৯১ থেকে ভ্যাট (V.A.T.) বা মূল্য সংযোজন কর (Value Added Tax/V A T) আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহন করা। যেসব দ্রব্য পূর্বে আবগারী শুল্কের তালিকা ভুক্ত ছিল সেগুলো (বিড়ি, সুপারী, লবণ, বয়ন শিল্পজাত দ্রব্য ইত্যাদি) ছাড়া অন্যান্য দ্রব্য ও সেবার উপর এবং পূর্বে কর মুক্ত ছিল এমন কিছু কিছু দ্রব্য ও সেবার উপর বর্তমানে ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর আরোপ করা হয়েছে।
জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তর:
সাবেক পাকিস্তান সরকারের অর্থ মন্ত্রনালয়ের অধীনে ১৯৫৭সালে জাতীয় সঞ্চয় বিভাগ চালু করা হয়েছিল। খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জন্য ১৯৬৮ পর্যন্ত একজন উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে খুলনায় জাতীয় সঞ্চয় বিভাগের একটি অফিস ছিল। ১৯৬৯সালে বিভাগটিকে পুনর্গঠিত করা হলে শুধু খুলনা বিভাগের জন্য আলাদা একটি বিভাগীয় অফিস খোলা হয় এবং সদর দফতর যশোরেই স্থাপন করা হয়। বৃহত্তর যশোর জেলার জন্য একজন সহকারী পরিচালক এবং প্রতি মহকুমার জন্য একজন করে সর্বমোট ৪জন সঞ্চয় অফিসার ছিল। প্রথম দিকে সঞ্চয়ের গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা এবং সঞ্চয় পদ্ধতি সন্বন্ধে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে আলোচনা সভার আয়োজন, প্রেক্ষাগৃহে চলচ্চিত্র প্রদর্শন, রাস্তা-ঘাটে প্রচারপত্র বা পোষ্টার বিলি ইত্যাদির মত প্রচার কার্য সম্পাদন করাই ছিল জাতীয় সঞ্চয় অফিসের অন্যতম দায়িত্ব।
বর্তমানেও জেলাসমূহে অর্থ-মন্ত্রনালয়ের অভ্যন্তরীন সম্পদ বিভাগের অধীনস্থ জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি করে জেলা সঞ্চয় অফিস রয়েছে। বৃহত্তর যশোর জেলার সঞ্চয় অফিসগুলোর লোকবল নিম্নরূপঃ
পদ অনুমোদিত পদসংখ্যা
যশোর ঝিনাইদহ নড়াইল মাগুরা
১. সহকারী পরিচালক ১ ১ * *
২. সঞ্চয় অফিসার (গ্রড-১) ১ * ১ + ১
৩. ঐ (গ্রড-২) * ১ * *
৪. নিম্নমান সহকারী ১ ১ ১ + ১
৫. এম, এল, এস, এস ১ ১ ১ ১
জেলা পর্যায়ের অফিসের দায়িত্ব হল জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্পসমূহকে জনপ্রিয় করে তোলা এবং প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে এসব প্রকল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা। বর্তমানে জেলা পর্যায়ের সঞ্চয় অফিসকে বিভিন্ন মেয়াদী সঞ্চয়পত্র বিক্রয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের অধীনস্থ বিভিন্ন বিনিয়োগযোগ্য প্রকল্পগুলো হলঃ প্রতি রক্ষা সঞ্চয়পত্র, বোনাস সঞ্চয়পত্র, ৫বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, ৩বছর মেয়াদী সঞ্চয়পত্র, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-এ হিসাব (সাধারণ হিসাব, মেয়াদী হিসাব ও বোনাস হিসাব), ডাক জীবন বীমা, সঞ্চয় টিকিট ও প্রাইজবন্ড।
উল্লেখ্য ২রা জুলাই ১৯৯৫ থেকে ১০০(একশ) টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ড চালু করা হয়েছে। আরো উল্লেখ্য, ১০(দশ) ও ৫০(পঞ্চাশ) টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ড প্রত্যাহার করা হয়েছে। পঞ্চাশ টাকার প্রাইজবন্ডের সর্বশেষ “ড্র” অনুষ্ঠিত হয় মে’৯৫ মাসে এবং দশ টাকার প্রাইজবন্ডের সর্বশেষ “ড্র” অনুষ্ঠিত হয় জুন’৯৫ মাসে। উল্লেখ করা যায় যে, সীমিত আয়ের লোকদের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা গড়ে তুলার লক্ষ্যে ১৯৭৪সালে ১০(দশ) টাকার এবং ১৯৮৫সালে ৫০(পঞ্চাশ) টাকার প্রাইজবন্ড চালু করা হয়েছিল।
জেলা হিসাব রক্ষণ অফিস:- মহা হিসাব রক্ষক (সিভিল), বাংলাদেশ-এর অধীনস্থ জেলা পর্যায়ের অফিস হলো জেলা হিসাব রক্ষণ অফিস। অন্যান্য জেলার ন্যায় যশোর অঞ্চলের প্রতিটি জেলায় জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার অফিস রয়েছে। জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে সহায়তা করার জন্য একজন তত্বাবধায়কসহ একাধিক নিরীক্ষক বা অডিটর ও দু’জন করে এম, এল, এস, এস নিয়োজিত রয়েছে। জেলা পর্যায়ের সকল সহকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন-পেনশন প্রদান করা এই অফিসের মুখ্য দায়িত্ব। জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসকে ট্রেজারীর কোন দায়িত্ব পালন করতে হয় না। ১৯৮৩সাল থেকে থানা পর্যায়ে হিসাব রক্ষণ অফিস চালু আছে। থানা পর্যায়ে রয়েছে একজন থানা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, একজন নিরীক্ষক ও একজন জুনিয়র নিরীক্ষক।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক:- কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন Z¡ivwš^Z করার উদ্দেশ্যে পঞ্চাশ-এর দশক থেকে ঋণ সুবিধা সমপ্রসারণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। সেই সুবাদে ১৯৫৯সালে যশোর-এ প্রতিষ্ঠা করা হয় কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এর একটি শাখা। একজন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার (শাখা ব্যবস্থাপক) এই শাখা ব্যাংক এর প্রধান নির্বাহী ছিলেন। পরবর্তীতে সদর ব্যতিত যশোর অঞ্চলের অন্য ৩টি মহকুমাতেই একটি করে কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক-এর শাখা খোলা হয়।
বর্তমানে যশোর অঞ্চলের প্রতিটি জেলা সদরে কৃষি ব্যাংক এর শাখা রয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও কৃষি উন্নয়ন ঋণদান সংস্থা-এ দু’টি প্রতিষ্ঠানকে একীভূত করে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সৃষ্টি করা হয়। বেসরকারী খাতে কৃষি উন্নয়ন এবং কৃষির সংগে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং পরিচালনার জন্য দীর্ঘ (২০বৎসর), মধ্য (৫বৎসর) ও ¯^í (২-৩বৎসর) মেয়াদী ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক-এর মাধ্যমে। সাধারণতঃ কৃষি ও সেচ যন্ত্রপাতি এবং উপকরণ ক্রয়, মৎস্য চাষ, হাঁস-মুরগী ও পশুপালন ইত্যাদি প্রকল্পের বিপরীতে ঋণ দেওয়া হয়।
গৃহ নির্মাণ ঋণদান সংস্থা:- বৃহত্তর যশোর জেলার জন্য যশোর-এ গৃহ নির্মাণ ঋণদান সংস্থার (এইচ বি এফ সি) একটি আঞ্চলিক অফিস আছে একজন সহকারী আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক এই অফিসের প্রধান। তাঁকে সাহায্য করার জন্য রয়েছে একজন সহকারী প্রকৌশলী। যশোর অঞ্চলের ৪টি জেলার পৌরএলাকা সমূহে গৃহনির্মাণ ঋণদান কর্মসূচী এই আঞ্চলিক অফিস দ্বারা পরিচালিত হয়। ঋণ গ্রহনকারীকে সুদসহকারে আসলের সমুদয় অর্থ পরিশোধ হওয়া পর্যন্ত এবং এর উপরে নির্মিত ভবনটি বন্ধক রাখতে হয়।
বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (এইচ বি এফ সি) ১৯৫২সাল থেকে গৃহায়নে অর্থসংস্থান খাতে বাংলাদেশের একমাত্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করে আসছে। আবাসিক বাড়ী নির্মাণ, সংস্কার এবং নির্মিত বাড়ী রি-মডেলিং-এর জন্য ঋণ সুবিধা প্রদানের উদ্দেশ্যে ১৯৭৩সালের জারিকৃত রাষ্ট্রপতির 7b¤^i আদেশের বলে এইচ বি এফ সি পুনর্গঠিত হয়। ইতিমধ্যে কয়েকটি বাণিজ্যিক ব্যাংক গৃহায়ন খাতে ঋন প্রদান করলেও এখন পর্যন্ত মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের জন্য এইচ বি এফ সি সহজ শর্তে আবাসিক ঋণের প্রধান যোগানদার। কর্পোরেশনের ঋণ সুবিধা পূর্বে শহরাঞ্চলেই সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে তা দেশের নানা সদর পর্যন্ত সমপ্রসারিত করা হয়েছে।
পূর্বে কর্পোরেশন থেকে ‘সাধারণ’ ও ‘বহুতল বাড়ীর জন্য’ ঋণ-এই দু’ধরনের ঋণ প্রদান করা হতো। বর্তমারে সমপ্রসারন করে সাধারণ ঋণ, গ্রুপ ঋণ, ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট ঋণ, mgwš^Z ঋণ, ছোট ছোট ইউনিট বিশিষ্ট বহুতল ভবন নির্মানকল্পে ঋণ এবং সেমিপাকা বাড়ী ঋণ-এই ছয় প্রকার ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।১
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়:- বৃহত্তর যশোর জেলায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন, Rb¯^v¯’¨ প্রকৌশল ও সমবায় অফিস আছে।
যশোর অঞ্চলে প্রত্যেক জেলায় নিয়োজিত রয়েছেন একজন সহকারী পরিচালক, স্থা্নীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন। পদাধিকার বলে তিনি জেলা বোর্ডের সচিব হিসাবেও কাজ করেন। জেলার ডেপুটি কমিশনার পদাধিকার বলে জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান। ফলে চেয়ারম্যান-এর তত্বাবধানে সচিব জেলা বোর্ডের আওতাভুক্ত সকল উন্নয়ন কর্মসূচি দেখাশোন করে থাকেন।
যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল জেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অফিস রয়েছে। জেলা পর্যায়ের এই অফিসের প্রধান হচ্ছেন একজন নির্বাহী প্রকৌশলী। এই অধিদপ্তরের অফিস থানা পর্যায়েও আছে। প্রত্যেক থানায় একজন থানা প্রকৌশলী, তিনজন উপসহকারী প্রকৌশলী, চারজন ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট ও অন্যান্য সহায়ক কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন। বৃহত্তর যশোর জেলার পল্লী এলাকার রাস্তা-ঘাট, সেতু, কালভার্ট ইত্যাদির অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্ব এই অফিসের উপর ন্যস্ত করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মান কজের দায়িত্বও এই অফিসকে দেওয়া হয়ে থাকে।
Rb¯^v¯’¨ প্রকৌশলী অফিস:- যশোরে Rb¯^v¯’¨ প্রকৌশল বিভাগের একটি আঞ্চলিক অফিস আছে। একজন তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এই অফিসের প্রধান। বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের চারটি জেলা এই আঞ্চলিক অফিসের আওতাধীন।
যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল জেলায় একজন করে নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন। অন্যদিকে প্রতি জেলার প্রতি থানায় একজন করে থানা প্রকৌশলী নিয়োজিত রয়েছেন। বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করাই এই অফিসের প্রধান দায়িত্ব। সাধারণতঃ শহর এলাকায় গভীর নলকূপ এবং পল্লী এলাকায় সাধারণ নলকূপ বসানোর মাধ্যমে নিরাপদ খাবার পানির চাহিদার প্রায় শতকরা ৮০ভাগ মেটানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবী করা যায়। গ্রামীণ ¯^v‡¯’¨i উন্নতির জন্য ¯^í ব্যয়ে পায়খানা (¯^v¯’¨m¤§Z) সরবরাহ করার দায়িত্বও এই বিভাগকে দেওয়া হয়েছে।
জেলা সমবায় অফিস:- সমবায় বিভাগের অধীনে যশোর অঞ্চলের প্রতিটি জেলায় সমবায় অফিস রয়েছে। সমবায় সমিতির গঠন, সুষ্ঠু পরিচালনার তদারকিসহ হিসাব নিরীক্ষা করাই এই অফিসের প্রধান কাজ। জেলা পর্যায়ে সমবায় অফিসের প্রধানের পদবী সহকারী রেজিষ্ট্রার। এছাড়া সমবায় অফিসারের নেতৃত্বে থানা পর্যায়েও সবমবায় অফিস আছে।
১৯৮১পূর্ব জেলা শিক্ষা অফিস:- উল্লেখ্য, দেশের সবক’টি জেলার জন্য তাঁত তত্ববধায়ক-এর ৩০টি পদ এবং তাঁত বিশেষজ্ঞ-এর ১০টি পদ রয়েছে। এই পদগুলোর বিপরীতের নিয়োগপ্রাপ্তদের সুবিধাজনক ষ্টেশনে পোষ্টিং দেওয়া হয়। সেই সুবাদে যশোর অঞ্চলের জেলাগুলোও তাঁত তত্বাবধায়ক ও তাঁত বিশেষজ্ঞ সার্ভিস পেয়ে থাকে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা পরিদপ্তরের অধীনে জেলা পর্যায়ে মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দেখাশোনা করার জন্য বৃহত্তর যশোর জেলায় শিক্ষা অফিস স্থাপন করা হয় ১৯৬১সালে। এই অফিসের প্রধানের পদবী জেলা শিক্ষা অফিসার। জেলা শিক্ষা অফিসার সমগ্র জেলার বেসরকারী মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসাসমূহের পরিচালনা তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন এবং তিনি এসব প্রতিষ্ঠানের ¯^xK…wZ প্রাপ্তির যোগ্যতা যাচাই করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন পেশ করতেন। ১৯৬১-এর আগে থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা তদারকির জন্য জেলা পর্যায়ে একজন জেলা শিক্ষা পরিদর্শক, মহকুমা (বর্তমানে জেলা) পর্যায়ে মহকুমা শিক্ষা পরিদর্শক এবং থানা পর্যায়ে থানা শিক্ষা অফিসার ও একজন করে সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর (থানা অফিসারের সহকারী) নিয়োজিত ছিলেন।
শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ তদানীন্তন শিক্ষা পরিদপ্তরকে বিভক্ত করে ১৯৮১সালে দু’টি আলাদা অধিদপ্তর সৃষ্টি করা হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর। ১৯৮২সালে সামরিক শাসন জারী হওয়ার পর গণশিক্ষা কার্যক্রম পরিত্যক্ত হওয়ার কারণে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মপরিসর প্রাথমিক শিক্ষায় সীমিত হয়ে যায়। গণতান্ত্রিক সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিত্যক্ত গণশিক্ষা কার্যক্রম ১৯৯২সালে পুনরায় শুরু করা হয় এবং প্রাথমিক শিক্ষাকে সার্বজনীন করে তোলার লক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা নামের একটি আলাদা বিভাগ সৃষ্টি করা হয়।
জেলা শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস:- বর্তমানে বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের প্রতি জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনস্থ জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনস্থ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় রয়েছে। জেলা শিক্ষা অফিসার মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষার এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার প্রাথমিক শিক্ষার তদারকী করে থাকেন। মাধ্যমিক শিক্ষার তদারকির জন্য থানা পর্যায়ে কোন কর্মকর্তা নেই। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষার জন্য থানা পর্যায়ে রয়েছে থানা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবং সহকারী থানা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (প্রতি ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য একজন হিসাবে)।
ফ্যাসিলিটিজ বিভাগীয় অফিস:- যশোর অঞ্চলের প্রত্যেকটি জেলা সদরের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফ্যাসিলিটিজ বিভাগের অফিস রয়েছে। একজন নির্বাহী প্রকৌশলী এই অফিসের প্রধান। জেলার সকল স্তরের সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দালান নির্মান ও মেরামত কাজ দেখাশোনা করার দায়িত্ব ফ্যসিলিটিজ বিভাগের উপর ন্যস্ত।
শিক্ষা বোর্ড:- ১৯৬২সাল পর্যন্ত সারা দেশের জন্য ঢাকায় একটি শিক্ষা বোর্ড ছিল। শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী প্রতিটি প্রশাসনিক বিভাগের জন্য একটি করে শিক্ষা বোর্ড স্থাপনের সরকারী সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ৭ই অক্টোবর, ১৯৬৩তারিখে যশোরে মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠা করা হয়। শিক্ষা বোর্ড একটি ¯^vqËkvwmZ প্রতিষ্ঠান। সাংগঠনিক কাঠামোর শীর্ষে রয়েছেন চেয়ারম্যান। তাঁকে সহায়তা করার জন্য আছেন একজন সচিব, একজন সহকারী সচিব, একজন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, একজন উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, একজন সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, একজন কলেজ পরিদর্শক, একজন স্কুল পরিদর্শক, একজন শারীরিক শিক্ষা অফিসার ও একজন হিসাব রক্ষণ অফিসার।
বৃহত্তর কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, পটুয়াখলী ও বরিশাল অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ যশোর শিক্ষা বোর্ডরে প্রশাসনিক আওতাধীন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সংগে সম্পর্কযুক্ত শিক্ষা কর্মসূচী সংগঠন, বিধি প্রণয়ন, পরিদর্শন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রন ইত্যাদিই হল বোর্ডের আওতাধীন প্রশাসনিক ক্ষমতা।
জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অফিস:- ১৯৬৯সাল পর্যন্ত কৃষি পরিদপ্তরের অধীনে প্রতি জেলায় ছিল জেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিস।১ কৃষি পরিদপ্তরকে ভেঙ্গে দু’টি আলাদা পরিদপ্তর সৃষ্টি করা হয় ১৯৭০সালে। এদু’টির একটি কৃষি সমপ্রসারণ ও ব্যবস্থাপনা পরিদপ্তর এবং অন্যটি কৃষি গবেষনা ও শিক্ষা পরিদপ্তর। জেলা কৃষি অফিসকে কৃষি সমপ্রসারণ ও ব্যবস্থাপনা পরিদপ্তরের সাথে যুক্ত করা হয় এবং ১৯৭৬সালে জেলা কৃষি কর্মকর্তার পদবী পরিবর্তন করে জেলা কৃষি সমপ্রসারণ কর্মকর্তা করা হয়। ১৯৮২সাল প্রশাসনিক পূনর্গঠনের ফলে কৃষি সমপ্রসারণ, উদ্ভিদ সংরক্ষণ, উপকরণ উন্নয়ন বোর্ড ইত্যাদি পরিদপ্তরসমূহ একীভূত করে কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সৃষ্টি করা হয়। যশোর ও ঝিনাইদহ জেলাদ্বয়ে ১৩মার্চ ১৯৮৩ তারিখ থেকে জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অফিসারের পদবী পরিবর্তন করে উপ-পরিচালক, কৃষি সমপ্রসারণ করা হয়। তৃতীয় শ্রেণীভুক্ত জেলা হিসাবে মাগুরা ও নড়াইল জেলার কৃষি সমপ্রসারণ অফিসের প্রধানের পদবী উপ-পরিচালকের পরিবর্তে করা হয় সহকারী পরিচালক।
থানা পর্যায়ে কৃষি সমপ্রসারণ অধীদপ্তরের অফিস আছে। প্রতি থানায় রয়েছে একজন থানা কৃষি কর্মকর্তা, একজন বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞ, একজন সহকারী কৃষি সমপ্রসারণ কর্মকর্তা, একজন জুনিয়র কৃষি ইউনিট অফিসার, একজন বীজ/সার পরিদর্শক ও একজন মেকানিক। এছাড়াও প্রতি ইউনিয়নে আছে কয়েকজন ব্লক সুপারভাইজার।
প্রত্যেক কৃষি সমপ্রসারণ অফিসে একটি পরিসংখ্যান শাখা রয়েছে। জেলা পর্যায়ে আছে একজন সহকারী পরিসংখ্যান পরিদর্শক ও একজন কম্প্যুটার অপারেটর এবং থানা পর্যায়ে নিয়োজিত রয়েছেন পরিসংখ্যান অনুসন্ধানকারী। পূর্বে কৃষি সমপ্রসারণ অফিসের সংগে শস্য সংরক্ষণ (গ্রাউন্ড) শাখাটিও ছিল। ১৯৭৯সালে জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অফিস থেকে আলাদা করে শস্য সংরক্ষণ (গ্রাউন্ড) ও অ্যারিয়েল অফিস স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে এ অফিসকে আবার কৃষি অফিসের অধীনে এনে একজন শস্য সংরক্ষণ পরিদর্শক এবং একজন সহকারী শস্য সংরক্ষণ পরিদর্শকের পদ সৃষ্টি করা হয়। থানা পর্যায়ে একজন শস্য সংরক্ষণ সহকারী, একজন সেপ্র মেকানিক ও ২/৩জন মোকাদ্দম শস্য সংরক্ষণের জন্য নিয়োজিত। থানায় পোকা-মাকড় নিধনের ওষুধ সংরক্ষণের জন্য একটি গুদাম আছে এবং একজন শস্য সংরক্ষণ সহকারী এর দায়িত্বে রয়েছেন।
যশোরে তুলা উন্নয়ন বোর্ড-এর একটি আঞ্চলিক অফিস আছে। এই অফিসের প্রধান হচ্ছেন একজন প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা। তাঁর অধীনে যশোর অঞ্চলের প্রতিটি জেলা বা সার্কেল-এর জন্য একজন তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছে। প্রত্যেক সার্কেল অফিসে আওতায় এক বা একাধিক থানা নিয়ে গঠিত ইউনিট অফিস আছে। প্রতি ইউনিট অফিসে একজন ইউনিট অফিসারসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক মাঠকর্মী রয়েছে।
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের এই অফিসের উদ্দেশ্য/দায়িত্ব হলো-উন্নত জাতের তুলা বীজ উদ্ভাবন ও তুলা উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় গবেষনা পরিচালনা করা এবং তুলা উৎপাতনে নিয়োজিত কৃষকদের জন্য প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এছাড়াও এই অফিস ভাল তুলা বীজ কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করে থাকে।
জেলা বিপণন অফিস:- যশোর-এ কৃষি বাজার অফিস স্থাপিত হয়েছিল ১৯৬৫সালে। অফিস প্রধান ছিলেন জেলা বাজার অফিসার । তাঁকে সাহায্য করার জন্য প্রতি মহকুমায় একটি করে মহকুমায় বাজার অনুসন্ধানকারীর অফিসও খোলা হয়েছিল। বর্তানে কৃষি বিপণন পরিদপ্তরের অধীনে যশোর অঞ্চলের প্রতি জেলায় বিপণন অফিস আছে। প্রথম শ্রেণীর জেলা হওয়াতে যশোর জেলা বিপণন অফিসের প্রধান হিসাবে নিয়োজিত ব্যক্তির পদবীজেলা বিপণন কর্মকর্তা এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর হওয়াতে যথাক্রমে ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল জেলায় জেলা বিপণন অফিসের প্রধানের পদবী হল বাজার অনুসন্ধানকারী।
জেলা বিপণন অফিসের প্রধান প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে রয়েছে বাজারের দরপত্র প্রচার করা, কৃষি ও পশুজাত দ্রব্যাদির সাপ্তাহিক এবং মাসিক ভিত্তিতে বাজার দর সংগ্রহ করা, কোন স্থানের উদ্বৃত্ত উৎপাদন ঘাটতি এলাকায় পাঠনোর ব্যবস্থা নেওয়া, শস্য ও বাজরের অবস্থা m¤^‡Ü তথ্য সংগ্রহ করা, ১৯৬৪সালের বাজার নিয়ন্ত্রণ বিধি মোতাবেক বাজারে দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য নির্ধারণ করা, কৃষি ও পশুজাত দ্রব্যাদি বিক্রেতাদের (অর্থাৎ আড়তদার ফড়িয়া যানদার ও অ্যাজেন্টদের) লাইসেন্স প্রদান করা ইত্যাদি। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিরয় প্রতিটি জেলায় একটি বাজার উপদেষ্টা কমিটি আছে। জেলা বিপণন কর্মকর্তা/বাজার অনুসন্ধানকারী এই কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে। এই কমিটির সুপারিশক্রমে ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স প্রদান করা হয়। প্রতি একমাস পর পর এ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬৪সালের জেলার বাজারসমূহকে ‘নোটিফাইড’ বাজার ঘোষণা করা হয়েছিল ১৯৬৭সালে।
প্রথম শ্রেণীর জেলা হিসাবে যশোরের জেলা বিপণন জেলা বিপণন কর্মকর্তার অধীনে পশুর চামড়া ছাড়ানো এবং শোধন পদ্ধতি শেখানোর জন্য একটি প্রদর্শক দল আছে। এই দলের প্রধান হিসাবে রয়েছে একজন গ্রেডার-ইন-চার্জ (এৎধফবৎ-রহ-পযধৎমব) এবং তাঁকে সহায়তা দানের জন্য একজন চামড়া শোধনকারী (ঊীঢ়বৎঃ ঈঁৎবৎ), একজন চামড়া ছাড়ানোর লোক (ঋষধুবৎ) ও একজন ক’শাই (ইঁঃপযবৎ) রয়েছে। এই দলের কাজ হলো পৌর এলাকা, গ্রাম্য হাট ও বাজারে ক’শাইদের জন্য চামড়া ছাড়ানো এবং চামড়া সংরক্ষণের উপর প্রশক্ষণ পরিচালনা করা। এছাড়া বিভাগীয় পর্যয়ে খুলনা অফিসে একটি প্রদর্শক দল রয়েছে। এই দল (যখন যেখানে দরকার) ভেড়ার লোম ছাঁটা পদ্ধতির উপর প্রদর্শনীর ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। এইদলে রয়েছে একজন উল প্রপাগান্ডা অফিসার (ডড়ড়ষ চৎড়ঢ়ধমধহফধ ঙভভরপবৎ), একজন এক্সপোর্ট শিয়ারার (ঊীঢ়বৎঃ ঝযবধৎবৎ), একজন শিয়ারিং অ্যাটেন্ড্যান্ট (ঝযবধৎরহম অঃঃবহফধহঃ) এবং একজন গ্রেডার রেকর্ডার (এৎধফবৎ জবপড়ৎফবৎ)। নিয়মিতভাবে ভেড়ার লোম ছাঁটার প্রয়োজনীয়তাকে জনসাধারণের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে এই দল প্রদর্শনী আয়োজনের মাধ্যমে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। তদুপরি জেলা বিপণন কর্মকর্তার অধীনে রয়েছে একজন হেড এগ-টেস্টার (ঐবধফ ঊমম-ঞবংঃবৎ) এবং একজন এগ-টেস্টার (ঊমম-ঞবংঃবৎ)।
মৃত্তিকাসম্পদ ইনষ্টিটিউটের জেলা অফিস:- যশোর জেলা সদরে মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনষ্টিটিউটের জেলা পর্যায়ে একটি অফিস আছে। একজন উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ অফিসের প্রধান এবং তাঁর সাহায্যকারী হিসাবে রয়েছেন দু’জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। এছাড়াও নিয়োজিত আছে কিছূ সহায়ক কর্মচারী। যশোর অঞ্চলের অন্যান্য জেলাগুলোও এ অফিসের আওতাধীন। তাই যশোরের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনষ্টিটিউটের এই অফিসটিকে বৃহত্তর জেলা পর্যায়ের অফিস বলা যায়।
এই অফিসের প্রধান দায়িত্ব হল বিভিন্ন এলাকার মাটির উর্বরতা পরীক্ষা/জরিপ করে ফলাফল প্রতিবেদন আকারে জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অফিসসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা। ভূমি ব্যবহরের ভবিষ্যত পরিকল্পনা প্রণয়নে এই জরিপ রিপোর্ট বিবেচনায় আনা যায়।
শিল্প সহায়ক কেন্দ্র:- যশোর-এ ১৯৬১সালে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে সহকারী পরিচালক (শিল্প ও বাণিজ্য)-এর একটি কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে আলাদা একটি শিল্প/মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করা হলে জেলা পর্যায়ের এই অফিসটি শিল্প মন্ত্রনালয়ের অন্তর্গত শিল্প অধিদপ্তরের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। এছাড়াও শিল্প মন্ত্রণালয়ের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার অধীনে জেলা পর্যায়ে একটি শিল্প সহায়ক কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। ১৯৮৯-৯০সালে বিনিয়োগ বোর্ড সৃষ্টির পর জেলা পর্যায়ের সহকারী পরিচালকের এই অফিসটি বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং এর কিছু কিছু দায়িত্ব শিল্প সহায়ক কেন্দ্রের উপর ন্যস্ত করা হয়।
বর্তমানে যশোর অঞ্চলের প্রতি জেলায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার শিল্প সহায়ক কেন্দ্র পরিচালনার জন্য রয়েছেন একজন উপ-মহাব্যবস্থাপক। শিল্প সহায়ক কেন্দ্রের আওতাভুক্ত কাজ গুলো হলঃ শিল্পোদ্যোক্তাদার অনুকূলে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প স্থাপনের জন্য জমি বরাদ্দ করা, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যাপারে সাহায্য করা, শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানীর ব্যাপারে সহায়তা প্রদান করা, বেসরকারী খাতে নতুন শিল্প স্থাপনের সম্ভাব্যতা পরীক্ষা করে দেখা ইত্যাদি।
জেলা পশু সম্পদ অফিস:- যশোর জেলায় পশুপালন অফিসটি ১৯৬১সালে স্থাপন করা হয়েছিল। জেলা পশুপালন কর্মকর্তা ছিলেন এই অফিসের প্রধান। তাঁর অধীনে ছিল সদর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল মহকুমার জন্য ৪জন মহকুমা পশুপালন অফিসার। বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের পর পদবী করা হয় জেলা/মহকুমা পশুসম্পদ কর্মকর্তা। সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। দায়িত্ব হলো পশু মহামারী প্রতিরোধ করা, অসুস্থ পশুর চিকিৎসা দেওয়া এবং পশু সম্পদের জাত উন্নতকরণ। প্রতিটি মহকুমায় একটি পশু হাসপাতাল স্থাপনের মাধ্যমে একজন করে ভেটেরেনারি সার্জন ও কম্পাউন্ডার নিয়োগ করা হয়।
১৯৮৪সালে মহকুমাগুলো জেলায় উন্নীত করা হলে যশোর অঞ্চলে জেলা পশুসম্পদ অফিসের সংখ্যা একটির স্থলে চারটি হয়। পশুসম্পদ অধিদপ্তরের জেলা পশুসম্পদ কর্মকর্তার এই অফিসের প্রধান দায়িত্ব জেলায় পশুসম্পদদের উন্নয়নের লক্ষ্যে কৃত্রিম উপায়ে গো-মহিষের প্রজননের ব্যবস্থা করা, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও পশু চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, পশু খাদ্যের চাষাবাদ বৃদ্ধি করা ইত্যাদি।
বর্তমান প্রত্যেক থানায় একজন থানা পশুসম্পদ কর্মকর্তা ও একজন ভেটেরেনারি সহকারী সার্জন রয়েছে। থানা পশুসম্পদ কর্মকর্তা উন্নতজাতের পশুচাষ সমপ্রসারণসহ পশুরোগ প্রতিরোধের জন্য কাজ করেন। ভেটেরেনারি সহকারী সার্জন থানা পশু হাসপাতালের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। তদুপরি প্রতি থানায় ভেটেরেনারি ক্ষেত্রে একজন মাঠ সহকারী রয়েছে। তাছাড়া উন্নতজাতের হাঁস-মুরগীর চাষ বৃদ্ধির জন্য থানা পশু হাসপাতালের সঙ্গে একটি পোল্ট্রি ইউনিট সংযোজন করা হয়েছে।
জেলা মৎস্য অফিস:- ১৯৪৬সালে যশোর জেলায় একটি জেলা মৎস্য অফিস চালু করা হয়। তখন এই জেলা অফিসের প্রধানের পদবী ছিল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। বর্তমানে যশোর অঞ্চলের ৪টি জেলায় মৎস অধিদপ্তরের অধীনস্থ মৎস্য অফিস আছে। প্রত্যেক জেলায় একজন করে জেলা মৎস কর্মকর্তা রয়েছেন। জেলা মৎস্য অফিসের প্রধান দায়িত্ব হলো জনগনকে মৎস্য চাষে আগ্রহী করে তোলা, আগ্রহী পুকুর মালিকদেরকে উন্নতজাতের মাছের পোনা সরবরাহ করা, আগ্রহী চাষীদের প্রয়োজনীয় কারিগরী জ্ঞান ও পরামর্শ দিয়ে প্রশিক্ষিত করে তোলা, মৎস্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল-এ জেলা মৎস্য অফিস ছাড়াও থানা পর্যায়ে মৎস্য অফিস আছে। প্রত্যেক থানায় রয়েছে একজন থানা মৎস্য কর্মকর্তা, একজন সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা এবং একজন মাঠ সহকারী।
গণপূর্ত বিভাগ:- বৃহত্তর-এ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের গণপূর্ত বিভাগ এবং গৃহসংস্থান অধিদপ্তরের অফিস রয়েছে। যে কোন সরকারী ভবন নির্মাণ ও তা রক্ষাণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব গণপূর্ত বিভাগ (পি, ডব্লিউ, ডি/পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট)-এর ওপর ন্যস্থ। সরকারী যে কোন সরকারী সংস্থার পক্ষে গণপূর্ত বিভাগ ভবন নির্মান ও মেরামত কর্ম পরিচালনা করেন। এজন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার তরফ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ গণপূর্ত বিভাগের নিকট ন্যস্ত করা হয়। সরকারী ভবন নির্মানের জন্য প্রয়োজনীয় নির্মান সামগ্রী সরঞ্জামাদি সরকারী বিধি মোতাবেক ক্রয় করা, প্রয়োজনীয় ভূমি হুকুম দখলের ব্যবস্থা করা, সরকারী উদ্যান, পার্ক, স্মৃতিশৌধ ইত্যাদি নির্মান ও রক্ষণাবেক্ষণ করা এই বিভাগের দায়িত্ব অন্তর্গত।
পূর্বে পূর্ত মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ যোগাযোগ, ইমারত ও জলসেচ (ঈ.ই.্ ও.*/সি বি এন্ড আই) নামক মূল বিভাগের যোগাযোগ ও ইমারত (ঈ ্ ই **/সি এন্ড বি) উপ-বিভাগটি শুধু মাত্র সরকারী নির্মান কাজের জন্য নির্দিষ্ট ছিল। ১৯৫৯সালে মূল বিভাগের নতুন নাম দেওয়া হয় পূর্ত, বিদ্যুৎ ও জলসেচ বিভাগ। ১৯৬২সালে যোগাযোগ ইমারত (ঈ ্ ই) বিভাগকে ভেঙ্গে দু’টি পরিদপ্তর সৃষ্টি করা হয়-ইমারত পরিদপ্তর এবং সড়ক ও জনপথ পরিদপ্তর। ১৯৭৭সালে ইমারত পরিদপ্তরের নাম পরিবর্তন করে পি, ডব্লিউ, ডি, (চঁনষরপ ডড়ৎশং উবঢ়ধৎঃসবহঃ) বা গনপূর্ত বিভাগ করা। এ বিভাগের অধীনে সারা দেশকে ৪টি প্রধান জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেকজন-কে কয়েকটি সার্কেল-এ বিভক্ত করা হয়েছে সার্কেলে আওতায় রয়েছে কয়েকটি ডিভিষন এবং ডিভিষনের আওতায় আছে সাব-ডিভিষন। বর্তমানে বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের ৪টি জেলাতেই গনপূর্ত বিভাগের অফিস আছে। জেলা পর্যায়ের
অফিসগুলো মূলতঃ যশোর সার্কেলের অন্তর্গত এবং যশোর সার্কেরটিও আবার খুলনা জোনের অন্তর্গত। যশোর সার্কেল অফিসের প্রধান হলেন একজন তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। যশোর সার্কেল অফিসের নিয়ন্ত্রণাধীনে যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল জেলার জন্য রয়েছে গনপূর্তরে দু’টি বিভাগীয় অফিস-(১) যশোর ডিভিষন, ও (২) মাগুরা ডিভিষন।
গৃহ সংগ্রাম পরিদপ্তর:- গৃহ সংস্থাপন অধিদপ্তরের দায়িত্ব হ’ল সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর নাগরিকদের আবাসন ব্যবস্থা সমপ্রসারণের লক্ষ্যে স্থান নির্ধারণ, উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধাদি নিশ্চিত করার মাধ্যমে ¯^í খরচে গৃহ নির্মাণ ও বিভিন্ন স্থানে বহুতল বাড়ি নির্মাণ এবং জবরদখলকারী বস্তিবাসীদের পুনবিন্যাসের ব্যবস্থা করা। এই অধিদপ্তরের অধীনে সমগ্র বাংলাদেশের জন্য ৩টি সার্কেল (মেট্রোপলিটান সার্কেল, পূর্ব সার্কেল ও পশ্চি সার্কেল) অফিস রয়েছে। প্রতিটি সার্কেলের দায়িত্বে রয়েছেন এবজন তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। বৃহত্তর যশোর জেলা পশ্চিম সার্কেলের জন্য দু’টি আঞ্চলিক অফিস আছে একটি দিনাজপুরে (রাজশাহী বিভাগে) ও অন্যটি খুলনায় (খুলনায় (খুলনা বিভগে)। খুলনা অঞ্চল তিনটি সাব ডিভিশনে বিভক্ত-খুলনা, যশোর, বরিশাল।
সড়ক জনপথ বিভাগীয় অফিস:- বর্তসারে যশোর অঞ্চলের প্রত্যেক জেলায় রয়েছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি বিভাগীয় প্রকৌশলী হলেন এই বিভাগীয় অফিসের প্রধান। ১৯৮৪-পূর্ব সহকুমাগুলোতে (যশোর সদর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল) উপ-বিভাগীয় অফিস ছিল। বর্তমানে সেই উপ-বিভাগগুলোকে বিভাগ করা হয়েছে যার ফলে সবকটি নতুন জেলায় নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস স্থাপিত হয়েছে।
বন বিভাগীয় অফিস:- ১৯৬২সালে বালিয়াডাঙ্গায় একজন ফরেষ্ট রেন্জার এর তত্ববধানে একটি বন বিভাগীয় নার্সারী খোলা হয়েছিল। বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের চারা তৈরী এবং প্রদর্শনী খামার পরিচালনা করাই এই নার্সারীর প্রধান কাজ। বর্তমানে সামাজিক বনায়ন এর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাই প্রত্যেক থানায় বন অধিদপ্তরের অধীনস্থ থানা বনায়ন ও নার্সারী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নার্সারী প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বৃহত্তর যশোর জেলার জন্য যশোরে রয়েছে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অফিস। এছাড়াও যশোরে একটি সার্কেল অফিস আছে। প্রধান হলেন বন সংরক্ষক।
কারখান ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শকের অফিস:- বৃহত্তর যশোর জেলার জন্য শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক পরিদপ্তরের অধীনস্থ একটি অফিস রয়েছে। এই অফিসের দায়িত্বে আছেন একজন পরিদর্শক।
ক্রীড়া পরিদপ্তর যুব ও উন্নয়ন অধিদপ্তর অফিস:- যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়রে অধীনস্থ ক্রীড়া পরিদপ্তর এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর-এর অফিস যথাক্রমে জেলা ও বৃহত্তর জেলা পর্যায়ে রয়েছে। ক্রীড়া পরিদপ্তরের জেলা পর্যায়ের অফিসের প্রধান হিসাবে নিয়োজিত ব্যক্তির পদবী হচ্ছে জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা। এই অফিসের প্রধান দায়িত্ব দেশের যুব সমাজকে সংশ্লিষ্ট করে ক্রীড়া কর্মকান্ডের সমপ্রসারণ ও সংগঠন করা। বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থার মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সহযোগীতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই অফিস প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভূমিকা রাখতে পারে। এতে ক্রীড়ার মনোয়ন ও সমপ্রসারণ দু’টোই হয়ে থাকে।
বৃহত্তর যশোর জেলায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের একটি অফিস যশোর-এ রয়েছে। এই অফিসের প্রধানের পদবী উপ-পরিচালক। এই অফিসের মাধ্যমে সমগ্র যশোর অঞ্চলে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা হয়।
সমাজসেবা অফিস:- যশোর-এ সমাজ কল্যাণ বিভাগের অফিস খোলা হয়েছিল ১৯৬০সালে। বর্তমানে বৃহত্তর যশোর অঞ্চলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের একটি সমাজসেবা অফিস রয়েছে। একজন উপ-পরিচালক এই আঞ্চলিক অফিসের প্রধান। তাঁকে সহায়তা দানের জন্য আছে একজন সহকারী পরিচালক, একজন সমাজসেবা কর্মকর্তা (রেজিস্ট্রেশন) এবং একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ অন্যান্য সহায়ক কর্মচারী। বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের জেলাগুলো এই আঞ্চলিক অফিসের আওতাভুক্ত। যশোরস্থ আঞ্চলিক অফিসের নিয়ন্ত্রনাধীনে যশোর অঞ্চলের সব জেলাসদরে রয়েছে শহর সমাজসেবা প্রকল্প অফিস (জেলা পর্যায়ে)। শহর সমাজসেবা প্রকল্প অফিসের দায়িত্বে একজন সমাজসেবা অফিসার ও কমপক্ষে দু’জন মহল্লা পর্যায়ের কর্মী নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া থানা পর্যায়ে সমাজসেব অফিস আছে। প্রত্যেক থানায় রয়েছে একজন সমাজসেবা অফিসার, একজন ফিল্ড সুপার ভাইজার, তিনজন ইউনিয়ন সমাজকর্মী, দু’জন কারিগরী প্রশিক্ষক ও অন্যান্য কর্মচারী।
যশোর সদরে শহর সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প (টৎনধহ ঈড়সসঁহরঃু উবাবষড়ঢ়সবহঃ চৎড়লবপঃ) অফিস স্থাপন করা হয়েছিল ১৯৫৯-৬০সালে। একজন পুরুষ সংগঠক ও পাঁচজন মহল্লা পর্যায়ের কর্মী তখন এই অফিসে কর্মরত ছিল। এই প্রকল্পের বিভিন্ন সমাজ কল্যানমূলক কার্যক্রমের মধ্যে একটি Ô¯^-Kg©Õ (ঝবষভ-যবষঢ়) কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে জেলা পরিষদ ও পৌরসভার সহায়তার ভবঘুরে শরণার্থীদের প্রশিক্ষন দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। এছাড়া ছিল ‘বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষন কেন্দ্র’ (ঠড়পধঃরড়হধষ ঞৎধরহরহম ঈবহঃৎব) যেখানে ¯^í আয়ের লোকদের বিভিন্ন বৃত্তিমূলক কাজ যেমন- টাইপ (মুদ্রণ), কাপড় সেলাই এবং সূঁচ কর্ম ইত্যাদির প্রশিক্ষন দেওয়া হ’ত।
সাবেক মহকুমা শহর মাগুরায় (বর্তমানে মাগুরা জেলা সদর) ১৯৬৫সালে শহর সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প অফিস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এই অফিসের জন্য ছিল একজন পুরুষ সংগঠক ও দু’জন মহল্লা পর্যায়ের কর্মী। এই প্রকল্পের কার্যক্রমসমূহের মধ্যে ছিল টাইপ (মুদ্রণ), সাঁটলিপি, দর্জি কাজ, েিডও মেরামত, মেশিনে উল বুনন এবং কিছু সামাজিক ও ধর্মীয় কাজকর্ম। এই প্রকল্পের অধীনে কিছু †¯^”Qv‡mex সংস্থা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পচিালনার জন্যে বাংলাদেশ সমাজ কল্যাণ পরিষদের নিকট হতে বাৎসরিক ভিত্তিতে আর্থিক অনুদান পেত এবং এখনও ঐ ব্যবস্থা অব্যাহত আছে।
যশোর অঞ্চলের চারটি শহরে (যশোর, ছিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল) সমাজসেব অধিদপ্তর পরিচালিত অনাথ ও নিঃস্ব শিশুদের জন্য শিশুসদনসহ দুঃস্থ মহিলাদের সাহায্যার্থে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র হয়েছে। এগুলোর মধ্যে যশোর কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা ৫০০ এবং অন্যগুলোর প্রত্যেকটির ধারণক্ষতা ১০০। প্রতি কেন্দ্রের জন্য রয়েছে একজন তত্বাবধায়ক, একজন সহকারী তত্বাবধায়ক, তিনজন শিক্ষক এবং দু’জন ম্যাট্রনযুক্তনার্স। যশোর কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ১৯৭২সালে (১৬ই জুন) এবং এটিতে ছিল অতিরিক্ত চারজন ম্যাট্রন। বর্তমানে ঝিকরগাছা (৩টি) যশোর কোতওয়ালী (৭টি), মনিরামপুর (৩টি), ঝিনাইদহ (২টি), কালীগঞ্জ (১টি), নড়াইল (৬টি) প্রভৃতি থানায় এতিমখানা চালু রয়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড:- ১৯৫০সাল পর্যন্ত বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন স্থানীয় পর্যায়ের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা চালু ছিল। বিদ্যুৎ সরবরাহ বিভাগকে বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক করা হয় ১৯৫১সালে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মূলতঃ ওয়াপদা’র অংশ ছিল। সাবেক ওয়াপদা (ডঅচউঅ/ডধঃবৎ ধহফ চড়বিৎ উবাবষড়ঢ়সবহঃ অঁঃযড়ৎরঃু) ১৯৫১সালে গঠিত হয়েছিল। ওয়াপদা’র দু’টি শাখা ছিল (১) পানি সম্পদ উন্নয়ন ও সেচ শাখা এবং (২) বিদ্যুৎ উৎপাদন সরবরাহ ও বিতরণ শাখা। বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের পর ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির 79b¤^i আদেশ বলে ওয়াপদা বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং পূর্বের ওয়াপদা কে ভেঙ্গে দু’টি নতুন সংস্থা ¯^wóª করা হয়ঃ (১) বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (চড়বিৎ উবাবষড়ঢ়সবহঃ ইড়ধৎফ/চউই) এবং (২) পনি উন্নয়ন বোর্ড (ডধঃবৎ উবাবষড়ঢ়সবহঃ ইড়ধৎফ)।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্ব হ’ল-বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ, বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান এবং বিদ্যুৎ বিতরণ করা। উল্লেখ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পি,ভি,বি/পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড) বর্তমানে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন।
বর্তমানে বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের জন্য যশোর-এ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এটি সার্কেল অফিস আছে। যশোর, ঝিনাইদহদ, মাগুরা ও নড়াইল জেলা এই সার্কেল অফিসের আওতাধীন। এই সার্কেল অফিসের প্রধান হলেন একজন তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। এছাড়াও একজন উপ-পরিচালক এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই সার্কেল অফিসে নিয়োজিত রয়েছেন।
বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের জেলাসমূহের জন্য রয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এর বিতরণ বিভাগের জেলা পর্যায়ের একটি অফিস। এই অফিসের প্রধানের পদবী নির্বাহী প্রকৌশলী। তাঁর অধীনে নিয়োজিত আছেন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, চারজন সহকারী প্রকৌশলীসহ অন্যান্য কার্যকর্তা ও কর্মচারী। প্রত্যেক জেলা সদরে এবং জেলার অন্যান্য থানার শহর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের অন্য হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ (ইলেকট্রিক সাপ্লাই) অফিস। একজন আবসিক প্রকৌশলী (রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার) এই অফিসের প্রধান। উল্লেখ্য, ইলেকট্রির সাপ্লাই অফিসের লোকবল বিদ্যুৎ গ্রাহকের মোট সংখ্যার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।
বর্তমানে পল্লী এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব মূলতঃ পল্লী বিদ্যুৎতায়ন বোর্ড-এর ওপর ন্যস্ত। বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন ও বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্ব এই বোর্ডের আওতাধীন এলাকাভিত্তিক পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃক পালিত হয়। একজন মহা-ব্যবস্থাপক (বেতনভুক্ত) সমিতির কাজকর্ম তত্বাবধান করেন। সমিতি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-এর নিকট হতে বিদ্যুত ক্রয়করে পল্লী এলাকার গ্রাহকদের নিকট কিছু বেশি দামে বিক্রি করে। লভ্যাংশে থেকেই সমিতির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন প্রদান করে থাকে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড:- পানি উন্নয়ন বোর্ড-এর একটি বিভাগীয় অফিস (সাবেক ওয়াপদা’র অংশ হিসাবে) যশোর-এ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ১৯৫৩সালে। ওয়াপদা থেকে পানি সম্পদ উন্নয়ন ও সেচ শাখাকে আলাদা করা হলে ১৯৭২সালে-এই বিভাগীয় অফিসটি সেচ, পানি সম্পদ উন্নয়ন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ জেলা অফিসে পরিণত হয়। একজন নির্বাহী প্রকৌশলী বর্তমানে এই অফিসের প্রধান। তাঁর সাহায্যকারী হিসাবে আছে একজন সহকারী প্রকৌশলী, দু’জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী এবং একজন কারিগরী কর্মকর্তা। ১৯৫৪সালে মক্কা-কপোতক্ষ প্রকল্প শুরু হলে একটি প্রকৌশল বিভাগ সৃষ্টি করা হয়। প্রকল্প সমাপ্তির পর থেকে এই বিভাগটি যশোর অঞ্চলের সেচ পরিদপ্তরের অধীনস্থ ছোটখাট স্কিমের রক্ষণাবেক্ষন কাজকর্ম দেখশোনা করে আসছে। এছাড়াও যশোর অঞ্চলেও ৪টি জেলায় (যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল) বর্তমানে উপ-বিভাগীয় অফিস আছে এবং প্রত্যেকটিতে একজন উপ-বিভগীয় প্রকৌশলী রয়েছে।
স্থানীয় সরকার
জেলা পরিষদ:- ১৯৭৫সালের স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ অনুযায়ী জেলা বোর্ড, জেলা পরিষদ নামে পুনর্গঠিত হয়। সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সংখ্যক মনোনীত সদস্য এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্ধারিত সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠিত হয়। এসব সদস্যের মধ্যে ছিলেন সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সরকারী কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় কমিশনার কর্তৃক মনোনীত মহিলা সদস্যগণ। জেলা পরিষদে এই প্রথম মহিলা সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা রাখা হয়। জেলা পরিষদের সদস্যদের মধ্য থেকে একজন সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। জেলা পরিষদ গঠিত হওয়ার পর প্রথম সভা অনুষ্ঠানের দিন থেকে জেলা পরিষদের মেয়াদ পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয় কিন্তু বাস্তবায়িত হয়নি।
লোকাল বোর্ড:- লোকাল সেলফ গভর্ণমেন্ট এ্যাক্ট ৩এর অধীনে লোকাল বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয়। যশোর জেলা বোর্ডের অধীনে যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল মহকুমার চারটি লোকাল বোর্ড ছিল। যশোর লোকাল বোর্ডের সদস্য ছিল ১৮জন, এদের মধ্যে পাঁচজন ছিল নির্বাচিত এবং ১৩জন সরকার কর্তৃক মনোনীত। ঝিনাইদহ লোকাল বোর্ডের সদস্য ছিল ৯জন। ২জন নির্বাচিত ও ৭জন ছিলো মনোনীত, মাগুরা বোর্ডের সদস্য ছিল ৯জন। তন্মধ্যে ৪জন ছিল নির্বাচিত ও ৫জন মনোনীত এবং নড়াইল লোকাল বোর্ডে ৯জন সদস্যের মধ্যে ৩জন নির্বাচিত এবং ৬জন সরকার কর্তৃক মনোনীত। এই পর্যন্ত লোকাল বোর্ডের কার্যাবলী খুব একটা ব্যাপক ছিল না। কেবল গ্রামীন পথ ঘাটের ব্যবস্থাপনা, সরকারী অনুদান প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহের মধ্যে অনুদান বন্টন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে বৃত্তি ও পুরস্কার প্রদান, খোয়াড় ও ফেরীঘাটসমূহের নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি কাজের মধ্যেই ছিল সীমাবদ্ধ।১
লোকাল বোর্ডগুলি ছিল জেলা বোর্ডের প্রতিনিধি এবং জেলা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কিছু কিছু কাজ করার ক্ষমতা হাতে পেতো। বোর্ডগুলির নিজস্ব কোন ক্ষমতা ছিল না। ছিল না নিজস্ব কোন আয়ের উৎস। ১৮৮৫খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৩৬সাল পর্যন্ত লোকাল বোর্ডগুলি নির্বাচনী প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করত। এই বোর্ডগুলি তাদের নিজেদের সদস্যদের মধ্যে থেকে অথবা বাইরে থেকে জেলা বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত করত। ১৮৮৫খ্রিষ্টাব্দে লোকার সেলফ্ গভর্ণমেন্ট এ্যাক্টের কিয়দংশ ১৯৩২সালে সংশোধিত হয়, কিন্তু মৌলিক নীতিগুলি অপরিবর্তিতই থেকে যায়। ১৯৩৬সালে এই এ্যাক্টের গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন করা হয় এবং লোকাল বোর্ডগুলি বিলুপ্ত হয়ে যায়।
যশোর মিউনিসিপ্যালিটি:- ১৮৬৪সালে তৎকালীন বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্ণরের ১৩ই জুলাই ঘোষণা অনুসারে ১লা আগষ্ট যশোর মিউনিসিপ্যালিটি গঠিত হয়। সে সময় যশোর জেলার রাজস্ব কালেক্টর ই, ডাব্লিউ, মলোনী ছিলেন যশোর পৌরকমিটির প্রথম চেয়ারম্যান। এছাড়াও উক্ত কমিটিতে কমিশনার নিযুক্ত হলেন জজ কর্কবার্ণ, টি, টি, এলেন, জে, সি, শ, রাজা বরদাকান্ত রায় বাহাদুর বাবু আনন্দ মোহন মজুমদার, বাবু মদন মোহন মজুমদার ও মৌলভী পয়রাতুল্লাহ। কোলকাতা ও হাওড়া ব্যতীত সারা বাংলায় সে সময় একমাত্র যশোরেই মিউনিসিপ্যালিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন যশোর পৌর কমিটির আয়তন ছিল সাড়ে ৪ বর্গমাইল এবং ১৮৭২সালের প্রথম লোক গণনা অনুসারে লোকসংখ্যা ছিল না ৭,৯৪৮জন। মোট করদাতার সংখ্যা ছিল ১,৬৯০জন। তৎকালীন যশোর মিউনিসিপ্যালিটি ১০টি মৌজায় বিভক্ত ছিল। এগুলো ছিল যশোর, পুরাতন কসবা, ঘোপ, বরন্দি নীলগঞ্জ সুরলী, বেজপাড়া, শংকর পাড়া, চাচড়া ও ঘরকী। ১৮৬৬সালের ৭ই জানুয়ারী যশোর মিউনিসিপ্যালিটির প্রথম বাজেট বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বাজেটে আনুমানিক আয় ছিল ১,৮০০টাকা এবং ব্যয় ছিল ৯,৭৬৪টাকা। ১৯১০-১১সালে যশোর মিউনিসিপ্যালিটি আয় ৪৮,৮২৮টাকা এবং ব্যায় ছিল ৪৪,৮০১টাকা। যশোর মিউনিসিপ্যালিটির প্রথম বেসরকারী সভাপতি হলেন প্যারী মোহন গুহ এবং বেসরকারী সহ-সভাপতি হলেন উমেশ চন্দ্র ঘোষ।
যশোর মিউনিসিপ্যালিটি কমিটি:- মিউনিসিপ্যাল এ্যাডমিনিষ্ট্রেশন অর্ডিন্যান্স ১৯৬০ অনুসারে যশোর মিউনিসিপ্যালিটিকে মিউনিসিপ্যাল কমিটিতে রূপান্তরিত করা হয়। খুলনা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ছিলেন এর নিয়ন্ত্রণাধীন কর্মকর্তা এবং পদাধিকারবলে যশোরের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছিলেন চেয়ারম্যান। ৪টি ইউনিয়ন কমিটির mgš^‡q ইহা গঠিত ছিল, সদস্য ছিল ৩৪জন। তন্মধ্যে ২৩জন নির্বাচিত এবং ১১জন নিয়োগ প্রাপ্ত। ১৯৬১সালের লোক গণনা অনুসারে শহরের জনসংখ্যা ছিল ৩৯,৩০৪জন এবং এর সীমানা ছিল সাড়ে ৪ বর্গমাইল।
কার্যাবলী:- শহরের Rb¯^v¯’¨, পয়ঃপ্রণালী নিষ্কাশন, পানি সরবরাহ, রাস্তা ঘাট প্রাথমিক বিদ্যালয় সাংস্কৃতিক ও সমাজ কল্যান কর্মকান্ডে দেখাশোন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল মিউনিসিপ্যাল কমিটির উপর।
১৯৫৫সালের পূর্বে মিউনিসিপ্যাল কমিটির আওধীন ছিল সীমানা ছিল ৩৩'০৭ মাইল। এর মধ্যে পাকা রাস্তা ১২'৪৯ মাইল, ও কাঁচা রাস্তা ১৮'৫৩ মাইল। তৎকালীন পঞ্চবার্ষকী পরিকল্পনায় কিছু রাস্তার সংস্কার করে ২ মাইল রাস্তা ঢালাই , ১৫ মাইল কার্পেটিং, ৮ মাইল পাকা, ১৫ মাইল কাঁচা রাস্তা তৈরী করা হয়। ফলে মোট রাস্তার আয়তন ৪০ মাইল বেড়ে যায়।
১৯৭২সালে লোকাল কাউন্সিল এবং মিউনিসিপ্যাল কমিটি ১৯৭২ (সংশোধন) বলে যশোর মিউনিসিপ্যাল কমিটি যশোর পৌরসভায় রূপান্তরিত হয়। ১৯৭৩সালে এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কমিশনারদে নিয়ে ত্মই কমিটি গঠিত হয়। কমিটির সদস্যবৃন্দ মিউনিসিপ্যালিটির ভোটার কর্তৃক নির্বাচিত হতেন। পৌরসভার কার্যকারিতা ছিল পাঁচ বৎসরের জন্য। এর কার্য়ক্রম পূর্বে মতই অব্যাহত থাকে এবং প্রয়োজনে নতুন কার্যক্রম গ্রহণের ব্যবস্থাও রাখা হয়।
ঝিনাইদহ টাউন কমিটি:- ১৯৫৮(০৫-০৫-১৯৫৮) সালে মিউনিসিপ্যালিটি হবার পূর্ব পর্যন্ত ঝিনাইদহ একটি মাত্র ইউনিয়ন বোর্ড ছিল। মিউনিসিপ্যাল এ্যাডমিনিষ্ট্রেশন অধ্যাদেশ ১৯৬০অনুসারে ঝিনাইদহ মিউনিসিপ্যালিটি ঝিনাইদহ টাউন কমিটিতে রূপান্তরিত হয়। এর সীমানা ছিল ৪ বর্গমাইল এবং জন সংখ্যা ১৫,৫৮০জন। কমিটিতে একজন চেয়ারম্যান ও ৯জন নির্বাচিত সদস্য ছিল। ঝিনাইদহ মহকুমা প্রশাসক ছিলেন এর নিয়ন্ত্রাধীন কর্মকর্তা।
মিউনিসিপ্যাল কমিটির দায়িত্বের মধ্যে ছিল ৪মাইল পাকা রাস্তা, ২১মাইল কাঁচা রাস্তা, ৮টি স্কুল ২টি লাইব্যেরী, ২টি ফেরীঘাট, ১টি কবরস্থান, ১টি শ্নশান ঘাট ও ১টি কমিটি উন্নয়ন কেন্দ্র।
ঝিনাইদহ পৌরসভা:- বাংলাদেশ লোক কাউন্সিল এবং মিউনিসিপ্যাল কমিটি (সংশোধন) আদেশ ১৯৭২ অনুযায়ী ঝিনাইদহ টাউন কমিটির নাম পরিবর্তন করে ঝিনাইদহ পৌরসভা করা হয়। এই এদেশ বলে পূর্বেকার সমস্ত স্থানীয় সরকার সংগঠন বিলুপ্ত হয়। পুর্নগঠিত পৌরসভা প্রশাসনের জন্য সরকার কর্তৃক কমিটি গঠন করা হয়। একজন সভাপতি, একজন সহ-সভাপতি এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সংখ্যক কমিশনার নিয়ে এই কমিটি গঠিত হয়। ১৯৭৩সালে এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৭৪সালে লোক গনণা অনুসারে ঝিনাইদহ পৌরসভার লোক সংখ্যা ছিল ৩৪,০২০জন।১ ১৯৮১সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৪৭,৯৫৩জন। ১৯৯১সালের লোক গণনা অনুসারে লোক সংখ্যা ছিল ৬৩,০০০জন।৩
১৯৭১-৭২সালে ঝিনাইদহ পৌরসভার সংশোধিত বাজেটে দেখা যায় যে, বাৎসরিক গড় আয় ও ব্যয় ছিল ২,২৩,৪২০টাকা। আয়ের প্রধান উৎসের মধ্যে ছিল কর থেকে ১,০১,৯৬০টাকা, রেইট ৮৭,০০০টাকা ফি ৯,২৭০টাকা এবং বিবিধ ২৫,১৯০টাকা। ব্যয় হয়েছিল পানি নিষ্কাশন ও পয়ঃপ্রণালী ৬৬,৭৭৪টাকা, রাস্তা মেরামত ৫৪,৩৫০টাকা, শিক্ষা ২১,৬৮০টাকা এবং বিবিধ ৯০,৬১৬টাকা।
এ ছাড়া ১৯৯৩-৯৪ অর্থ বছরের মেহগনি গাছ ৭৩০টি লাগানো হয়েছে। পৌর পরিষদ চলতি অর্থ বছরে আরও বিভিন্ন জাতের গাছ লাগানোর কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।
মাগুরা টাউন কমিটি:- ১৯৬০সালে মিউনিসিপ্যাল এ্যাডমিনিষ্ট্রেশন অর্ডিন্যান্স অনুসারে। ১৯৬৫সালের b‡f¤^i মাসে মাগুরা টাউন কমিটি গঠিত হয়। টাউন কমিটি গঠন করা পূর্বে ইহা ইউনিয়ন কাউন্সিল ছিল। নির্বাচিত দশজন সদস্যর mgš^‡q টাউন কমিটি গঠিত ছিল। ইহার আওতাধীন সীমানা ছিল সাড়ে ৭ বর্গমাইল এবং জনসংখ্যা ১৫,০০০জন।২ ১৯৭৪সালের লোক গণনা অনুসারে মাগুরা পৌরসভায় জনসংখ্যা ছিল ২০,২৪০জন।৩
মাগুরা মহকুমা প্রশাসক ছিলেন টাউন কমিটির প্রধান কর্মকর্তা। কমিটির চেয়ারম্যান যে সমস্ত কর্মচারীর সহায়তা কার্য পরিচালনা করতেন তারা হলেন একজন সচিব, একজন হিসাব নিরীক্ষক, একজন ¯^v¯’¨Kg©x, একজন জমাদার, ১৬১জন মেথর, একজন ওভারসীয়ার, ২জন কেরাণী, ৪জন রাজস্ব পরিদর্শক এবং ৪জন পিয়ন।
টাউন কমিটির আওতাধীন ছিল ২মাইল পাকা রাস্তা, ২মাইল আর সি, সি, রাস্তা, ২০মাইল কাঁচা রাস্তা, ২টি বাজার, ২টি কবরস্থান এবং ২টি শ্নশান ঘাট। এ ছাড়া টউন কমিটির ব্যবস্থাপনায় ছিল ১টি ডিগ্রী কলেজ, ২টি উচ্চ বিদ্যালয়, ১টি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ৫টি প্রাইমারী স্কুল, ১টি মাতৃসদন, ১টি কমিউনিটি সেন্টার, ২টি হাসপাতাল এবং ১টি টি, বি, ক্লিনিক।
মাগুরা পৌরসভা:- ১৯৭২সালের বাংলাদেশ লোকাল কাউন্সিল এবং মিউনিসিপ্যাল কমিটি (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুসারে মাগুরা টাউন কমিটি মাগুরা পৌরসভায় রূপান্তরিত হয়। ১৯৭৩সালে পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭২-৭৩সালে মাগুরা পৌরসভার প্রশাসকের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায় যে, সেই সময় পৌরসভার বাৎসরিক গড় আয় ও ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১,৪০,২৮৪'৬২টাকা।
আয়ের প্রধান উৎসের মধ্যে ছিল কর থেকে ৫১,৭২৩টাকা উন্নয়ন ডড়ৎশং (চৎড়মৎধসসব) থেকে ৩৭,০০০টাকা এবং কনসারভেন্সী ১৯,৫৩৮টাকা। ব্যয়ের প্রধান খাত ছিল জেনরেল এ্যাষ্টাবলষ্টিমেন্ট ১২,৪২৪টাকা, উন্নয়ন খাতে ৩৮,৪৯২'২৮টাকা এবং ¯^v¯’¨ ও পয়ঃপ্রণালী ৩৪,৪৩৬টাকা।
১৯৭৪সালে মাগুরা পৌরসভার জনসংখ্যা ছিল ২০,৯৪২জন।১ ১৯৮১সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৮,০০৭জন।২ ১৯৯১সালের লোক গণনা অনুসারে জনসংখ্যা ছিল ৪১,০০০ জন।৩
১৯৯২-৯৩ অর্থ বছরে মাগুরা পৌরসভার আয় ও ব্যয় ছিল ৭২,৯৬,৬২৯'৬০টাকা।
১৯৯৩-৯৪ অর্থ বছরে মাগুরা পৌরসভায় আয় ছিল ১,২১,০০'০০০ ব্যয় হয়েছিল ১,৮৬,২৯,২৪৪টাকা।
কোর্ট চাঁদপুর মিউনিসিপ্যালিটি:-১৮৮৩সালে কোর্ট চাঁদপুর মিউনিসিপ্যালিটি প্রতিষ্ঠান হয়। মিউনিসিপ্যাল বোর্ড ইহা পরিচালনা করতো। মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ১০জন তন্মধ্যে ৬জন নির্বাচিত এবং ৪জন সরকার কর্তৃক মনোনীত। মিউনিসিপ্যালিটির আওধীন সীমানা ছিল ৪ বর্গমাইল। করদাতার সংখ্যাছিল ১,৪৫৪জন বা নোট জনসংখ্যার শতকরা ১৮ভাগ। ১৯৯০-৯১সালে ইহার বাৎসরিক আর ছিল ৭,২৩২টাকা, ব্যয় হয়েছিল ৭,০৭১টাকা।২ আয়ের প্রধান উৎস ছিল।
(১) করদাতাদের আয়ের শতকরা ১ভাগ, বা থেকে আয়হতো বাৎসরিক ৩,১০৩টাকা। (২) পয়ঃপ্রণালী করা থেকে বাৎসরিক ৬৪৬টাকা, (৩) গবাদী পশু ও যানবাহনের উপর থেকে ২,১৫৩টাকা ব্যয় হতো এবং (৪) বেট থেকে আদায় মতো মোট ৬,২৬৮।
কোর্ট চাঁদপুর টাউন কমিটি:- ১৯৬০সালের মিউনিসিপ্যাল এ্যাডমিনিষ্ট্রেশন অডিন্যান্স অনুসারে কোর্ট চাঁদপুর টাউন কমিটি গঠর করা হয়। এর আওতাধীন সীমানা ছিল ৪ বর্গমাইল এবং লোকসংখ্যা ছিল ৮,৭৫১জন ১৯৬১সালের সেনসাস অনুসারে।
কোর্ট চাঁদপুর পৌরসভা:- বাংলাদেশ লোকাল কাউন্সিল ও মিউনিসিপ্যাল কিিমটি অধ্যাদেশ (সংশোধন) ১৯৭২অনুসারে টাউন কমিটি কোর্ট চাঁদপুর পৌরসভা নামে রূপান্তরিত হয়। ১৯৭৩সালে পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭৪সালের সেনসাস অনুসারে লোকসংখ্যা ছিল ১৫,৪১১জন।
১৯৭২-৭৩সালে কোর্ট চাঁদপুর পৌরসভার আয় ও ব্যয় ছিল ৯০,০০০টাকা। আয়ের প্রধান উৎসগুলির মধ্যে ছিল কর থেকে ৩৫,২০০টাকা, রেইট ১৪,০০০টাকা, সরকারী অনুদান ২৫.০০০টাকা এবং বিবিধ ১৫,০০০টকা। ব্যয় হয়েছিল ¯^v¯’¨ ও পয়ঃপ্রণালী ৩২,০৫৪টাকা, জেনারেল এষ্টাবলিশমেন্ট ১০,৬২৫টাকা, কর আদায় ৭,০৭১টাকা রাস্তা মেরামত ৬,৬০০টাকা এবং বিবিধ ৩৩,৬৫০টাকা। ১৯৮১সালের লোক গণনা অনুসারে লোক সংখ্যা ছিল ২০,৫৯৪জন।১ ১৯৯১সালের লোক গণনা অনুসারে লোক সংখ্যা ছিল ২৩,০০০জন।২ বর্তমানে কোর্ট চাঁদপর পৌরসভার নিম্নরূপ সম্পদ আছে।৩
সীমানা ১৮,১৩ বর্গ কিঃ মিঃ জনসংখ্যা ২৩,৬৫৩ হোল্ডিং সংখ্যা ৪৮৭৩ সাস্তা ৫১'৫০ কিলোমিটার, নর্দমা-৮'৫০কিঃমিঃ নলকুপ ২৩৬টি, স্কুল-(প্রাইমারী ও উচ্চ)- ১২টি, কলেজ-২টি, মসজিদ-২৫টি, মাদ্রাসা-১টি, মন্দির-৯টি, কবরস্থান-১৯টি, শ্নশান ঘাট-২টি, হাসপাতাল-১টি, সিনেমা হল-১টি, পার্ক-২টি, পাঃ লাইব্রেরী ১টি, রাস্তার বাতি-৪০৪টি ও হাট বাজার-২টি।
১৯৯৩-৯৪ অর্থ বছরের পৌরসভার আয় ও ব্যয় ছিল যথাক্রমে ১,১৬,০০,৪১৯টাকা ও ১,০৫,৮৯,০৪৫টাকা।
নড়াইল টাউন কমিটি:- ১৯২৮সালে নড়াইল ইউনিয়ন বোর্ড স্থাপিত হয়। ১৯৬০সালে ইহা ইউনিয়ন কাউন্সিলে রূপান্তরিত হয়। ১৯৬৫সালে পুনরায় ইউনিয় কাউন্সিলকে টাউন কমিটি হিসাবে পুনর্গঠন করা হয়। টাউন কমিটির আওতাধীন সীমান ছিল ১১'৪ বর্গমাইল এবং জনসংখ্যা ছিল ১৬,৮৬৫জন।১ নির্বাচিত একজন চেয়ারম্যানসহ ১১জন সদস্যের mgš^‡q এই কমিটি গঠিত ছিল। নড়াইল মহকুমার মহকুমা প্রশাসক ছিলেন এর নিয়ন্ত্রণাধীন কর্মকর্তা।
টাউন কমিটির দায়িত্বের মধ্যে ছিল ৫মাইল পাকা রাস্তা, ১০মাইল কাঁচা রাস্তা, ৩৬১টি বাড়ী, ৩টি উচ্চ বিদ্যালয়, ২টি জুনিয়র হাই স্কুল, ১টি মাদ্রাসা, ৩টি নৈশ স্কুল, ৯টি অবৈতনিক প্রাইমারী স্কুল, ২টি গ্রন্থাগার, ২টি বাজার, ৪টি ফেরীঘাট, ২টি কবরস্থান, ১টি শ্বশান ঘাট, ১টি কমিউনিটি সেন্টার ও ১টি ডিসপেনসারী।
১৯৬৫-৬৬ অর্থ বছরে টাউন কমিটির ব্যয় ছিল ১৬,০১৫'১০টাকা এবং ১৯৬৬-৬৭সালে ব্যয় ছিল ২৫,৯৩৪'৮৯টাকা।
নড়াইল পৌরসভা:- বাংলাদেশ লোকাল কাউন্সিল এবং মিউনিসিপ্যাল কমিটির (সংশোধন) অধ্যাদেশ ১৯৭২ অনুসারে টাউন কমিটি পৌরসভায় রূপান্তরিত হয়। ১৯৭৩সালে পৌরসভার নির্বাচন হয়। ১৯৭৪সালের লোক গণনা অনুসারে নড়াইল পৌরসভার লোক সংখ্যা ২১,০২৩জন।১ ১৯৮১সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৩১,০৩২জন।২ ১৯৯১সালের লোক গণনা অনুসারে লোকসংখ্যা ছিল ২৭,০০০জন।৩
১৯৯৩-৯৪ অর্থ বছরে নড়াইল পৌরসভার আয় ছিল ১,৩৪,১১,৭২২টাকা এবং ব্যয় ছিল ১,০৫,৮৯,০৫৪টাকা।
মহেশপুর টাউন কমিটি:- ১৯৬০সালে মহেশপুর মিউনিসিপ্যালিটি টাউন কমিটিতে রূপান্তরিত হয়। মৌলিক গণতন্ত্রের উপর ভিত্তি করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৬০সালে। ১৯৬১সালের সেনসাস অনুসারে টাউন কমিটির সীমান ছিল ৩ বর্গমাইল এবং জনসংখ্যা ছিল ৪,১৫৩জন।
মহেশপুর শহর কমিটি:- বাংলাদেশ লোকাল কাউন্সিল ও মিউনিসিপ্যাল কমিটি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ১৯৭২ অনুসারে মহেশপুর টাউন কমিটি শহর কমিটিতে রূপান্তরিত হয়। নতুন কমিটি গঠন করা পূর্বে শহর কমিটি কমিটির কার্য পরিচালনা করতো মহকুমার প্রশাসক নিয়োজিত একজন চেয়ারম্যান।
মহেশপুর পৌরসভা:- বাংলাদেশ স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ এবং পৌরসভা) অধ্যাদেশ ১৯৭৩ অনুসারে শহর কমিটি পৌরসভাতে রূপান্তরিত হয়। ১৯৭৩সালে এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭৪সালের সেনসাস অনুসারে পৌরসভার জনসংখ্যা ছিল ৭,১৩২জন।১ ১৯৮১সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৮,৪২৮জন।২ ১৯৯১সালের লোক গণনা অনুসারে লোকসংখ্যা ছিল ১২,০০০জন।৩
কালীয়া পৌরসভা:- বাংলাদেশ লোকাল কাউন্সিল ও মিউনিসিপ্যাল কমিটি অধ্যাদেশ ১৯৭৬ অনুসারে ১-৬-৭৬ তারিখে কালিয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। থানা সার্কেল অফিসার প্রশাসক হিসাবে পৌরসভার দায়িত্ব পালন করতেন। ১৯৭৪সালের সেনসাস অনুসারে লোকসংখ্যা ছিল ১৩,৭৫০জন। হোল্ডিং সংখ্যা ছিল ২৪২৭।১ ১৯৮১-৮২সালে পৌরসভার আয় ও ব্যয় ছিল ২,৯৯,৮৯০টাকা।
১৯৭৯সালে পৌরসভার ১ম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যান এর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৯২-৯৩সালে পৌরসভার আয় ছিল ৩৪,২৯,৯৭৭'৩৪টাকা, ব্যয় ছিল ২৮,৬৮,৪০৮'২৭টাকা। ১৯৯৩-৯৪ অর্থ বছরে পৌরসভার আয় ও ব্যয় ছিল যথাক্রমে ৯২,৮৪,১২০টাকা ও ৯২,১১,৮০৯'৫৯টাকা। ১৯৮১সালের লোক গণনা অনুসারে লোকসংখ্যা ছিল ২২,০৪৬জন।২ বর্তমানে কালীয়া পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ড ও ১৬টি মহল্লার mgš^‡q গঠিত।
থানা কাউন্সিল:- ১৯৫৯সালে সরকারী আদেশ অনুযায়ী তদানীন্তন যশোর জেলার ২০টি থানার প্রতি থানায় থানা কাউন্সিল গঠিত হয়। মহকুমা প্রশাসকগণ পদাধিকার বলে এই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সার্কেল অফিসারগণ (উন্নয়ন) ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান। ১৯৫৯-৬০সালে প্রায় সকল থানাতে তিন শ্রেণীর সদস্য ছিলঃ (১) প্রতিনিধিত্ব মূলক (২) সরকারী এবং (৩) নিয়োগকৃত। সরকারী ও আধাসরকারী সদস্য ছিল শতকরা ৫০ভাগ।
বুনিয়াদী গণতন্ত্রের ৩২ নং ধারায় নির্দেশানুযায়ী থানা কাউন্সিল, জেলা কাউন্সিলের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতো। থানা কাউন্সিলের প্রধান কাজ ছিল সংশ্লিষ্ট থানার মধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়ন কাউন্সিলের কার্যাদির mgš^q সাধন করা। ইউনিয়ন কাউন্সিল কর্তৃক পরিকল্পিত সকল উন্নয়নমূলক কাজই থানা কাউন্সিলের মাধ্যমে করতে হতো। থানা কাউন্সিল অবশ্য জেলা কাউন্সিলের নির্দেশ ছাড়া কিচুই করতে সক্ষম ছিল না।