
Home সাহিত্যিক / Litterateur > হাজি আবদুল করিম / Haji Abdul Karim (1872 -1920)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 90682 বার পড়া হয়েছে
হাজি আবদুল করিম / Haji Abdul Karim (1872 -1920)
হাজি আবদুল করিম
Haji Abdul Karim
Home District: Narail, Kalia
পরিচয়:
পুথি কবি হাজি আবদুল করিম বর্তমান নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার প্রাচীন কেনাবাড়ি অর্থাৎ বর্তমান কলাবাড়িয়া গ্রামে ১৮৭২ সালে ভূমিষ্ঠ হন। হাজি আবদুল করিমের পিতার নাম তিন কড়ি মোল্যাহ। তিনি দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন তবে ধার্মিকতা ও ভক্তি বিশ্বোসে পরিবারটি ছিলো অনন্য।
শিক্ষাজীবনঃ
কৈশরে হাজি আবদুল করিমকে এলেস হাসিলের জন্য আটলিয়া গ্রামের হাতেম আলি সাহেবের কাছে পাঠানো হয়। আঃ করিম হাতেম আলি সাহেবের নিকট থেকে আরবি ও ফারসি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষা গ্রহন করেন। এরপর আরো উচ্চ শিক্ষা লাভের লক্ষে হাতেম আলি সাহেব তাকে কলকাতার মোটয়াবুরুজের পাশে কাঁঠাল বাড়িয়ার হাফেজি মাদ্রাসার ভর্তি করে দেন। এখান থেকে আবদুল করিম ১৮ পারা কোরনা শরিফ মুখস্থ করেন। এই জন্য হাফেজ আঃ করিম নামে তিনি ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেন।
কর্মজীবনঃ
কাঁঠাল বাড়িয়ায় অবস্থান কালে আঃ করিম বাদাখশানের সাধক পুরুষ পির সৈয়দ জানের সহচর্যে যান। এই সাধক পুরুষের কাছ থেকেই আঃ করিম আধ্যাত্মিক বিদ্যা ও শক্তিতে শক্তিমান হন। আঃ করিমকে তার পির নির্দেশ দিয়েছিলেন মুর্ষদের মধ্যে জান বিতরনের জন্য। আঃ করিম কলকাতার মেটিয়া বুরুজ থেকে মানুষের হেদায়েতের জন্য যখন বের হয়ে যান তখন তার বয়স ১৮/১৯। আঃ করিম খুলনা বাগের হাটের রমজিতপুর, ব্যাতাগা, পারহোগলা, তিলক প্রভৃতি এলাকার শিকারিদের হেদায়েত করেন।
আঃ করিম ভারতের বিভিন্ন স্থানে ধর্মপ্রচার করেন। একদিন তিনি পুজব্রত পালন করেন। আঃ করিম কলকাতা অবস্থান কালে পুঁথি সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হন। তিনি তার হেদায়েতের ফাঁকে ফাঁকে পুথি রচনা শুরু করেন। হাজি আঃ করিমে দুই খানি পুঁথি কিতাবের সদ্ধান পাওয়া যায়। এই দুই পুথি কিতাব হলো, ১. নুরুল ইসলাম ছহিদুল যাক্কর হাদী ও ২. গুপ্তকালাম রত্নমানিক। প্রথম কিতাবটি প্রকাশিত হয় কলকাতা শিয়ালদহ প্রেস থেকে বাংলা ১৩১২ মোতাবেক ১৯০৫ সালে। দ্বিতীয় কিতাবখানি প্রকাশ পায়নি। আঃ করিম যেমন আধ্যাত্মিক শক্তির অত্বিকারী ছিলেন তেমনি ছিলেন কবিত্বের অধিকারী।
হাফেজ আঃ করিম তার একমাত্র শিশুপুত্র ওয়ালি উল্লাহকে রেখে ইন্তেকাল করেন ১৩২৭ সাল বা ইংরেজি ১৯২০ সালে। এবার আমরা পুথি কবি হাফেজ আঃ করিমের ‘নুরুল ইসলাম ছাই মুলব ক্বর হাদী কিতাব থেকে কিছু অংশ উদ্ধৃতি করছিঃ
বিদেশে এসেছে ভাই, গালিলি না থাকা চাই
গাফিলের ঘুম হইতে জাগো একবার ॥
গাফিলি ঘুমের চোটে, বেদ্বীন মোদের ঈমান নোটে
এসো দেখি একচোটে উবি এই বার ॥
সযারেতে এসে মোরা ঘুমিয়ে হইয়াছি সারা
ফঁটি পাইয়া জতি চোরা গাট কাটে সবার ॥
গাট কাটিয়া মাল নেছে তাতে না কষ্ঠ হইয়াছে
ঘায় মোদের ঈমান নেছে জীবন কীছার ॥
ঈমান নিয়া ঐ যায়, কুন্দে গিয়া ধরো তায়
পানাইয়া নাহি যায় ধরো হে সত্বর ॥
মহাসিন হোসাইন:
তথ্য সংগ্রহ: বৃহত্তর যশোরের লোক কবি ও চারণ কবি।