
Home ভাষা ও সংস্কৃতি (Language and Culture) > যশোর জেলার আঞ্চলিক ভাষা- আপডেট চলছে
এই পৃষ্ঠাটি মোট 87182 বার পড়া হয়েছে
যশোর জেলার আঞ্চলিক ভাষা- আপডেট চলছে
ডঃ গ্রীয়ার্সন যশোর জেলার আঞ্চলিক ভাষাকে পূর্ব মধ্যেভাষার অনুসারী বলে উল্লেখ করেছেন এই করণে যে, এই উপভাষা ঢাকা ও বরিশাল জেলার ব্যবহৃত পূর্বাঞ্চলীয় উপভাষা এবং মধ্যে ভাষা ব্যবহৃত আদর্শ উপভাষার সংগে যোগসূত্র স্থাপন করেছে। এই জেলার উপভাষায় পূর্বাঞ্চলীয় উপভাষার উচ্চারণ লক্ষ করা যায়, যেমন “ছ” এর উচ্চারণ কোমল ‘ছ’ বা ইংরেজী ‘এস’ এর মত এবং “জ” এর উচ্চারণ কোমল ‘জ’ বা ইংরেজী “জে” এর মত। এই ভাবে ‘আছে’ শব্দটির উচ্চারণ ‘আসে’ কোমল “ছ” সহ এবং বা ‘জন’ মানুষ উচ্চারিত হয় “জোন” (কোমল “জ” সহ সাধারণ কথাবার্তায় এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় যে, “এ” “হ্যাট” শব্দে ব্যবহৃত “অ্যা” রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন, গেল-এখানে “গেল” শব্দের উচ্চারণ “গ্যালো”।
কিন্তু “চ” কোমল “চ” কিংবা ইংরেজী “এস” এর মত উচ্চারিত হয় না। তারা যখন বলে “চাকর” তখন এই শব্দে কোমল “চ” উচ্চরিত হয় না। তারা যখন বলে “হইল” সে হইল, তখন তার উচ্চারণ “অইল” নয়, এবং একই ভাবে “ধরিয়া” দখল করা-দরিয়া নয়। “স” কখনও “হ” রূপে উচ্চারিত হয় না। তারা যখন বলে “সাপ” তখন উচ্চরণ কখনই “হাপ” নয়। সমপ্রদান কারকে “কে”স বিভক্তির পরিবর্তে “বে” ব্যবহৃত হতে দেখা যায়, কিন্তু শব্দে সংক্ষিপ্ত করণের কথা বাদ দিলে এ ক্ষেত্রে ব্যাকরণের নিয়ম কার্যতঃ একই।
নিম্নলিখিত উদাহরণটি যশোর থেকে সংগৃহীত। অতীতকলের নাম পুরুষের একবচনে অর্কমক ক্রিয়াপদের শেষে “ও” কার এবং সর্কমক ক্রিয়াপদের শেষে “এ” কার যুক্ত হয়। যেমন “থাকলো” উঠলো “কিন্তু” বলে সে বললে/তা দেলে (সে দিল)।
নিত্যবৃত্ত অতীতে ক্রিয়াপদ সর্বদাই অর্কমক ক্রিয়ারুপে ব্যবহৃত হয়। যেমন “খাতো”-তারা খেতো।
এক জনের দুট ছল ছিল । তারগে মোদ্দি ছোট জোন তার বাপরে কলে বাবা। জমা জমির যে ভাগ আমি পাব তা আমারে দ্যাও। তাতে সে তারগে বিষই ভাগ কোরে দেলে। কিছুদিন পরে ছোট ছল সকল য়্যাক সাত কোরে দুর দেশে গ্যালো। সেখানে ফো জলুমি কোরে আপনার সব খোয়াইয়ে দেলো। সব খরচ কোরে ফেল্লি পরে সে দেশে মানান্তর হলো। তভন সে টানাটানিতে পড়ল। তোরপর সেই দ্যাশের য়্যাক জোন গেরোস্তোর কাছে থাকলো। সে তাকে নিজের ভুইতি শুওর রাক্তি দেলে। মেষে শুওর যে খোষা খাতো তাই দিয়ে পেট ভোরতি ইচ্ছে করে কিন্তু কেউ তা দেলে না। শেষে তার ধরে বুদ্ধি ইল সে আলি আমার বাপের কাছে যায় তাঁরে কব বাবা। আমি পরমেশ্বরের বেপোক্ষেও তোমার সামনে পাপ কোরিচি। আমি যে তোমার ছল বোলে পোরচে দিতি পাত্তি চিনে। তুমি আমারে এক জোন মাইনাখেগো চাকরের মোতো রাহ। শেষে সে উঠে তার বাপের কাছে গ্যালো। অনেক দুরিত্তি তারে দেকতি পায়ে দয়া কোরে দৌড়িয়ে গিয়ে তার গলা ধোরে মুহি চুমো খালে। ছল তারে বলে বা বা, আমি পরমেশ্বরের বেপোক্ষে তোমার সামনে পাপ কোরিচি। আমি তোমার ছল বলে পোরচে দিতি পাত্তি চিনে। কিন্তু বা বা আপন চাকরদের বল্লেন শিগগির সকলের তাল কাপড় এনে ওরে পরায়ে দাও। এর হাতে আংটি ও পায়ে জুতা দিয়ে দ্যাও এবং আমরা খেয়ে দেয়ে আমোদ কোরি কারণ আমার এই ছল মোরে গিইলো সে আবার বাঁচচ্চে। হারিয়ে গিইলো আবার পাওয়া গিয়েচে। পরে তারা আমোদ কোত্তি লাগালো।
আর তার বড় ছল মাঠে ছেল। সে বাড়ির কাছে এস সাম বাচনা শুন্তি পালে। তখন সে য়্যাক জোন চাকোরকে কাছে ডেকে জিজ্ঞাসা কল্লে এসব কি। সে বল্লে তোমার ভাই আইয়োচে তাইতি তোমার বাপ ভোজ তোয়ের কোরেচে কারণ তিনি তারে ভাল আবস্তায় পায়েচেন কিন্তু সে রাগে উঠলো বাড়ির মোদ্দি যাতি চালে না। তারপর তার বাপ বাইরে বাস বুজুতি লাগলো। কিস্তু সে তা বাপেরে কোতি লাগলো দ্যাখো; আমি এদ্দিন ধারে তোমার সেবা কোত্তিচি তোমার কোনোকথা কোন দিন অমান্য কোরিনি তাতে তুমি কখনো আমারে একটি ছাগলের ছা দ্যাওনি যে আমার বন্ধুগণ নিয়ে আমোদ করি। কিন্তু তোমার এই ছল যে বেন্যোদের সাতে তোমার সমুদাথ সম্পত্তি উড়িয়ে দিয়েছে সে যখন আলে তখন তুমি তার জন্যি বড় কোরে ভোজ দেলে। কিন্তু সে তারে কলে বাছা তুমি সব সোমাই আমার সাতে আছ আর যাহয় সবিতো তোমার। কিন্তু আমোদ করা ও খুসী হওয়া উচিত হোয়েচে কারণ তোমার এভাই মোরে গিইলো, বাঁচেচে হারিয়ে গিইলো গিয়েচো।