
Home ঐতিহ্য (Tradition) > বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম কর্মস্থল যশোর কালেক্টরেট ভবন
এই পৃষ্ঠাটি মোট 86577 বার পড়া হয়েছে
বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম কর্মস্থল যশোর কালেক্টরেট ভবন
আধা গ্রাম, আধা শহরটি ছিল তাঁর অপছন্দ। ম্যালেরিয়া রোগে ভরা। দূষিত পানি। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এমন নানা কথা তিনি শুনেছিলেন কলকাতায় বসেই। তবুও তাঁকে এই শহরে আসতে হয়। এটি তাঁর প্রথম কর্মস্থল। অবশেষে তিনি

সে সময় যশোরের সঙ্গে কলকাতার যাতায়াত ব্যবস্থা ছিল খুবই দুর্গম। রেললাইন বসেনি। নৌকা পথে যশোরে আসতে ব্যয় হতো তিন থেকে চার দিন। যদিও কলকাতা থেকে যশোরের দূরত্ব মাত্র ১শ' ১০ কিলোমিটার। কিন্তু এই এলাকার নদীগুলোর অধিকাংশই উত্তর থেকে দক্ষিণবাহী। অথচ যশোর থেকে কলকাতা সোজা দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে। ভাগীরথী, আপার ভৈরব, মাথাভাঙ্গা, কপোতাক্ষ ও লোয়ার ভৈরব দিয়ে যশোরে আসতে হতো। আবার দ

যশোরে বঙ্কিমচন্দ্রের জীবনের ব্যক্তিগত একটি শোকের অধ্যায় যুক্ত হয়। ১৮৪৯ সালে বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর পাশের নারায়ণপুর গাঁওয়ের এক পঞ্চমবষীয় বালিকাকে বিয়ে করেন। বঙ্কিমচন্দ্রের বয়স তখন এগারো বছর। তাঁর স্ত্রীর বয়স যখন পনেরো তখন বঙ্কিম বাবু তাঁকে যশোরে তাঁর কর্মস্থলে নিয়ে আসেন। যশোরে থাকাকালীন তাঁর স্ত্রী জ্বরে আক্রান্ত হন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় পাঠিয়ে দেন। কয়েক দিন রোগ ভোগের পর মারা যান তাঁর স্ত্রী। পরে ১৮৬০ সালে রাজলক্ষ্মী দেবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।
১৮৬০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বঙ্কিমচন্দ্র যশোরে ছিলেন। এ সময় সর্বত্র নীলকরদের অত্যাচার শুরু হয়েছে। এ সংক্রান্ত ঘটনার বিভিন্ন তদন্তে তিনি কৃষকদের আনুকূল্য দেখাতেন। এ জন্য নীলকররা তাঁকে প্রাণহানির হুমকিও দিয়েছিল। যশোর থেকে বদলি হয়ে যান মেদিনীপুর জেলার নেগুয়াতে। সেখান থেকে পুনরায় আবার তাঁকে যশোরে বদলি করা হয়। যশোরে কিছুদিন থাকার পর তাঁকে পাঠানো হয় খুলনাতে। খুলনা ছিল তখন যশোর জেলার একটি মহকুমা। তাঁকে মহকুমার আইনশৃঙ্খলা উন্নতির জন্য বিশেষ দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি খুলনাতে থাকাকালেই ১৮৬১ সালের শেষ দিকে মোড়েলগঞ্জের বারুইখালিতে নীলকরদের সঙ্গে রহিমউল্লার নেতৃত্বে কৃষকদের সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়। এতে রহিমউল্লাহসহ ১৭ জন নিহত হন। এই মামলা তদন্ত করেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র। তাতে তিনি নীলকরদের দায়ী করেন।
সাজেদ রহমান (ব্কুল)
দৈনিক জনকণ্ঠ
যশোর অফিস