
Home ঐতিহ্য (Tradition) > মহেশপুরের খালিশপুর নীলকুঠি
এই পৃষ্ঠাটি মোট 86778 বার পড়া হয়েছে
মহেশপুরের খালিশপুর নীলকুঠি
ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর নীলকুঠি এখনও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যেখানে চলতো শুধু কৃষকদের নিপীড়ন নির্যাতন, অত্যাচার এবং নারীদের নিয়ে রঙ্গলীলা। সেই ভবনগুলো আছে, নেই শুধু ইংরেজদের শোষণ দমন নিপীড়ন। এখনও ওই নীলকুঠির পাশ দিয়ে গেলে গা ছমছম করে।
এ নীলকুঠির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদের শাখা। এ নদ দিয়ে নৌকায় করে আসতো ইংরেজরা। তারা ওই কুঠিতে থাকতো আর কৃষকদের ওপর অত্যাচার করতো, বলতো সুন্দরী নারীদের আনার জন্য। এ নীলকুঠি এখনও দাঁড়িয়ে আছে। এটাকে সংস্কার করা দরকার। নতুন প্রজন্মকে জানানোর জন্য এটাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। এ কুঠিতে ১৮১০ সাল থেকে ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত নীলকর সাহেবদের অত্যাচার বাড়তে থাকে। এর মধ্যে বিক্ষুব্ধ কৃষকরা যখন বিদ্রোহ করতে শুরু করলো তখন এদের অত্যাচার কিছুটা কমলো। যা ইতিহাসে নীল বিদ্রোহ বলে খ্যাত। এছাড়া অন্যান্য কুঠি ছেড়ে যখন ইংরেজরা চলে যায়, তখন জমিদারদের মধ্যে বিক্রি করে দিয়ে যায়; কিন্তু মহেশপুরের খালিশপুর নীলকুঠিটি কোনো ইংরেজ বিক্রি করে দিয়ে যেতে পারেনি। তারা কৃষকদের বিদ্রোহের পর এটি ফেলে পালিয়ে যায়। যার কারণে এই জমিগুলো এখন সরকারি খাস খতিয়ানে আছে। ফলে এ সমস্ত ভবন পুনরায় সংস্কার করে পর্যটন হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে। একদিকে যেমন সরকার কিছু রাজস্ব পাবে অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানের লোকজন ভ্রমণ করতে এসে অনেক কিছু জানতে পারবে। এজন্য এলাকার লোকজন এই নীলকুঠির ধসে যাওয়া ভবনগুলো সংস্কারের দাবি তুলছে। বর্তমানে নীলকুঠির পাশেই স্থাপিত হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মহাবিদ্যালয় ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর। যা দেখতে এখনই লোকজন ভিড় জমায়। যদি নীলকুঠি ভবনগুলো মেরামত করে দেয়া যায় তাহলে এটাও হতে পারে দেশের ভ্রমণকারীদের জন্য মনের আবেগ মেটানোর ভ্রমণ স্থান। গত কেয়ারটেকার সরকার আমলে এ নীলকুঠিটি নিলামে বিক্রি করার চেষ্টা করা হয়েছিলো। সে সময় এলাকার সচেতনমহল আন্দোলন করে বন্ধ করে দেয়। এলাকাবাসী দাব তুলেছে, এটা সংস্কার করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার। এখানে ১০ একর জমিসহ বিশাল আমবাগান রয়েছে, যা দেখতে মনোরম।
তথ্যসূত্র:
দৈনিক মাথাভাঙ্গা