
Home নড়াইল জেলা / Narail District > নড়াইল সদর উপজেলা / Narail Sadar Upazila
এই পৃষ্ঠাটি মোট 86858 বার পড়া হয়েছে
নড়াইল সদর উপজেলা / Narail Sadar Upazila
ভৌগোলিক অবস্থান :
৩৮১.৭৬ বর্গ কি: মি: আয়তনের নড়াইল সদর উপজেলা উত্তরে লোহাগড়া এবং শালিখা উপজেলা, দক্ষিণে কালিয়া ও অভয়নগর উপজেলা, পূর্বে লোহাগড়া উপজেলা, পশ্চিমে বাঘেরপাড়া এবং যশোহর সদর উপজেলা দ্বারা বেষ্টিত।
প্রধান নদ-নদী ও খাল-বিল :

প্রাধান নদীর মধ্যে রয়েছে নবগংগা, চিত্রা ও ভৈরব।
১১টি খাল-বিলের মধ্যে সালুয়া বিল উল্লেখযোগ্য।
শহরের আয়তন ও জনসংখ্যার তথ্য :
নড়াইল শহর চিত্রা নদীর তীরে অবস্থিত। ৯টি ওয়ার্ড ও ২৪টি মহল্লা নিয়ে গঠিত এই নড়াইল শহর। শহরের আয়তন ২৮.৮৯ বর্গ কি: মি:।
শহরের মোট জনসংখ্যা ৩৬৭৮৫। এর মধ্যে পুরুষ ৫১.৩৪% এবং মহিলা ৪৮.৬৬%। জনসংখার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কি: মি: এ ১২৭৩। শহরের জনসংখ্যার মধ্যে শিক্ষিতের হার ৫১.৭০%। শহরে একটি রেস্ট হাউজ ও একটি ডাকবাংলা রয়েছে।
প্রশাসন :
১৮৫০ সালের কয়েক বছর পূর্বে নড়াইল থানা স্থাপিত হয়েছিল। বর্তমানের নড়াইল সদর উপজেলা ১৯৬১ সালে থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১টি পৌরসভা, ৯টি ওয়ার্ড, ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ, ২০৪ টি মৌজা এবং ২২৮টি গ্রাম নিয়ে উপজেলাটি গঠিত।
ঐতিহাসিক ঘটনা :
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনী ও রাজাকাররা ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর মাছিমদিয়া গ্রামের কলেজ ছাত্র মিজানুর রহমানকে হত্যা করে। প্রতিশোধ হিসেবে মুক্তিযোদ্ধারা ৯ ডিসেম্বর পাকিস্তানী সেনা বাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণ করে এবং এতে মতিউর রহমান নামে আরেকজন ছাত্র নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা চার দিক দিয়ে পাকিস্তানী বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর নড়াইলকে মুক্ত করে।
মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শন :
রূপগঞ্জে (পানি উন্নয়ন প্রাঙ্গনে) ১টি গণকবর।
জনসংখ্যা :
উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২৫০৭২৫। এর মধ্যে পুরুষ ৫১%, মহিলা ৪৯%, মুসলমান ৬৫.২৭%, হিন্দু ৩৪.৩৫%, বৌদ্ধ ০.০১%, খ্রিষ্টান ০.০১% এবং জাতিগত লোক (বুনো) ০.৩২%।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ :
মসজিদ ২৭৫টি, মন্দির ৭৫টি, গীর্জা ১টি, সৌধ সমাধি ২টি, পবিত্র স্থান ২টি। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গোয়াল বাথান মসজিদ এবং রূপগঞ্জ জামে মসজিদ।
সাক্ষরতা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান :
গড় সাক্ষরতা ৩৬.৪%। এর মধ্যে পুরুষ ৪৩.৪% ও মহিলা ২৯.২%।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান :
কলেজ ৮টি, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১টি, উচ্চ বিদ্যালয় ৪০টি, জুনিয়র হাইস্কুল ১৮টি, মাদ্রাসা ১০টি, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৮টি, বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৫টি, কমিউনিটি স্কুল ৬টি, স্যাটেলাইট স্কুল ৯টি এবং প্রি-ক্যাডেট স্কুল ১টি।
উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল (১৮৫৭), নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ (১৮৮৬), বাঁশগ্রাম-বিষ্ণুপুর হাইস্কুল (১৯৩২), সিংগিয়া হাটবালপুর হাইস্কুল (১৯২১), পার্বতী বিদ্যাপীঠ, শাহবাড মাজিদিয়া আলিয়া মাদ্রাসা (১৯৫০)।
স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত সংবাদপত্র ও সাময়িকী :
ডেইলী ওসান, সাপ্তাহিক প্রান্তিক, নড়াইল বার্তা, পাক্ষিক কিরণ, ভোরের আলো।
সাংস্কৃতিক সংগঠন :
গণগন্থাগার ২টি, সিনেমা হল ১টি, মহিলা সংগঠন ২টি, থিয়েটার গ্রুপ ১টি ও সাহিত্য সমিতি ১টি, অপেরা দল ৩টি।
প্রধান পেশা :
কৃষি ৫৩.৩৯%, মৎস্য ২.০৪%, কৃষি মজুর ১৮.১৮%, শ্রম মজুর ২.১৮%, শিল্প ১.১৯%, বাণিজ্য ৮.০৮%, পরিবহন ২.৭%, চাকুরী ৬.২৭% এবং অন্যান্য ৫.৯৭%।
ভূমির ব্যবহার :
চাষযোগ্য মোট জমি ২৮৯৯৮ হেক্টর এবং পতিত জমি ২৯৬ হেক্টর। একক ফসলী জমি ২২.৩২%, দ্বিফসল ৫৮.৪৮% এবং ত্রিফসলী জমি ১৯.২%। সেচের আওতাধীন জমি ৫০%।
ভূমি নিয়ন্ত্রণ :
১৮% ভূমিহীন, ২৩% প্রানিত্মক, ৪২% ক্ষুদ্র, ১২% মাঝারি এবং ৫% ধনী।
প্রধান ফসল :
ধান, পাট, গম, তেল বীজ, ডাল, পান এবং সবজি।
বিলুপ্ত অথবা প্রায় বিলুপ্ত :
নীল, কাউন, চীনা এবং মেসতা।
প্রধান ফল :
আম, কাঁঠাল, পেঁপে, কলা, জাম, নারিকেল, পেয়ারা এবং জামরুল।
যোগাযোগ ব্যবস্থা :
পাকা সড়ক ১০৩ কি: মি:, আধা পাকা ৩৯ কি: মি: এবং কাঁচা রাস্তা ৭৮৬ কি: মি:।
ঐহিত্যবাহী পরিবহন :
পাল্কী (বিলুপ্ত), ঘোড়ার গাড়ী ও গরুর গাড়ী (প্রায় বিলুপ্ত), নৌকা।
শিল্প প্রতিষ্ঠান :
বস্ত্র কল ১টি, করাত কল ২০টি, বরফ কারখানা ১০টি, চাল ও আটা কল ৩০টি, ওয়েল্ডিং ৩০টি এবং ছাপাখানা ৪টি।
কুটির শিল্প :
কাঠ ও কাঠের কাজ ১৭৫টি, বাঁশ, বেত এবং কাঠের কাজ ২৬৩টি, স্বর্ণকার ৭০টি, কামার ২০টি, মৃৎ শিল্প ৪০টি এবং দর্জি ২১০টি।
হাট বাজার ও মেলা :
হাট ও বাজারের মোট সংখ্যা ২৮টি। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রূপগঞ্জ, গোবরা, সিংগিয়া, তুলারামপুর, মীর্জাপুর, মাইজপাড়া, নাকমি ও চালিতাতলা। মেলা মোট ১০টি। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, সুলতান মেলা, নিথিনাথ তলা মেলা, রূপগঞ্জ মেলা এবং হিজলডাঙ্গা মেলা।
প্রধান রপ্তানী :
পান, পেঁপে, খেজুরের গুড় এবং নারিকেল।
এনজিও তৎপরতা :
তৎপরতা চালাচ্ছে এমন গুরুত্বপূর্ণ এনজিওগুলো হচ্ছে ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, প্রশিকা, কুমিল্লা প্রশিকা, সিডিএফ, আসার আলো এবং স্যালভেশান আর্মি।
স্বাস্থ্য কেন্দ্র :
জেলা সদর হাসপাতাল ১টি, স্যাটেলাইট ক্লিনিক ৩টি, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৯টি।
তথ্য সূত্র :
বাংলা পিডিয়া ওয়েবসাইট
অনুবাদ :
কামাল নাসের, আরটিভি।
সম্পাদনা :
মো: হাসানূজ্জামান বিপুল
সর্বশেষ আপডেট :
নভেম্বর ২০১১