
Home নড়াইল জেলা / Narail District > নড়াইল জেলার অধীবাসী / The inhabitants of Narail District
এই পৃষ্ঠাটি মোট 86896 বার পড়া হয়েছে
নড়াইল জেলার অধীবাসী / The inhabitants of Narail District
নড়াইল জেলার অধীবাসী
The inhabitants of Narail District
নড়াইল জেলার অধিকাংশ অধিবাসীই মুসলমান এবং হিন্দু সম্প্রদায়ভূক্ত। তবে একটি বৃটিশ পরিবার তিন পুরুষ ধরে এই জেলায় শংকরপুর (কুমারগঞ্জ) গ্রামে বসবাস করে আসছে। অতীতে কুমার গঞ্জে একটি বড় নীলকুঠি ছিল যা বর্তমানে নবগঙ্গা নদীর ভাঙ্গনে ধ্বসে গেছে এবং মূল কুঠিটি মাটির গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। শুধু ছাদটুকু মাটির উপরে জেগে থেকে গবেষক ও ঐতিহাসিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চলেছে। উক্ত বৃটিশ পরিবারের প্রধান আর্থার ডি ব্যারেজ ছিলেন এই নীলকুঠির ম্যানেজার। তিনি মূলতঃ ফ্রান্সের অধিবাসী, বৃটিশ মহিলাকে বিয়ে করে তিনি বৃটিশ জাতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যান। তার জ্যেষ্ট পুত্র ম্যালকম ডি ব্যরেজ ছিলেন কলিকাতার বিখ্যাত স্টার থিয়েটার এর প্রখ্যাত অভিনেতা।
মূলতঃ নড়াইল জেলার এই মানব গোষ্টির বিশেষ কোনো পৃথক সত্ত্বা নেই। এদের সকলেই বহুকাল ধরে বিভিন্ন জাতির সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। প্রাক- আর্য নরগোষ্টির দ্রাবিড় জাতি এবং পরের আর্য জাতির নর গোষ্টির ক্ষীণতম রক্তের ধারা কোন কোন স্থানে কিছু থাকলেও থাকতে পারে। আর্যপূর্ব নরগোষ্ঠি মূলতঃ নেগ্রিটো, অষ্ট্রিক (নিষাদ), দ্রাবিড় ইত্যাদি ছিল। অষ্ট্রিক গোষ্ঠি থেকে বাঙ্গালী জাতির বড় অংশের উদ্ভব বলে নৃ-তাত্তিকগন মনে করেন। আজ থেকে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার বছর পূর্বে ইন্দোচীন হতে আসাম হয়ে এতদঞ্চলে প্রবেশ করে। যেমন (১৯৮৩) সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলাকালীন সময়ে লোহাগড়া উপজেলায় আসামীজ মেয়েরা সন্তানাদি নিয়ে প্রবেশ করেছিল। এরা কোল, ভীল, সাওতাল, মুন্ডা, হো প্রভৃতি উপজাতীয়দের পূর্ব পুরুষ হিসেবে চিহ্নিত। বাঙ্গালী রক্তে এদের প্রভাব সুস্পষ্ট। বাংলা শব্দ ভান্ডারে সংস্কৃতিতে এরা গভীর প্রভাব বিস্তার করেছে। অষ্ট্রিক জাতির পরে এখানে আসে দ্রাবিড় জাতি। এদের সভ্যতা উন্নত বলে অষ্ট্রিক জাতিকে গ্রাস করে ফেলে। নৃতাত্ত্বিকদের মতে এতদঞ্চলের যে সমস্ত বাঙ্গালীরা বসবাস করে তাদের রক্তধারায় দ্রাবিড় প্রভাব সু্স্পষ্ট।
অষ্টম শতাব্দীর পর আরবদের ইসলাম প্রচার ও ব্যবসা-বানিজ্যের মাধ্যমে বাঙ্গালী জাতির সাথে মিশ্রণ ঘটে। মূলতঃ বর্জন ও রূপান্তরের মাধ্যমে নড়াইল জেলা তথা বাংলাদেশী জনজীবন গড়ে উঠেছে। বৃহত্তর বাঙ্গালী জাতির অংশরূপে অষ্ট্রিক দ্রাবিড়, আর্য, মঙ্গলীয়, সেমেটিক, হেমেটিক প্রভৃতি জনগোষ্ঠীর রক্তধারার সংমিশ্রণে গঠিত এই জেলার অধিবাসী। তাই কালো-ধলা, বেটে-লম্বা-মাঝারী, কটাচুল-কালোচুল, সোজাচুল-বাকাচুল সকল প্রকারের মানুষই এই জেলায় পরিদৃষ্ট হয়। কথ্য ভাষার শ্রেণী বিন্যাসে নদীয়া ও শান্তপুরী ভাষার অপেক্ষাকৃত অনুন্নত ভাষার বৈশিষ্ট্য এখানে পরিলক্ষিত হয়। আবার এই জেলার গা ঘেষে প্রবাহমান মধুমতি নদীর পূর্ব পাড়ের ফরিদপুরী ভাষার সাথেও এর ব্যতিক্রম দেখা যায়।
তথ্য সূত্র :
নড়াইল জেলার অতীত ও বর্তমান
লেখক : আকরামুজ্জামান মিলু
সম্পাদনা :
মো: হাসানূজ্জামান (বিপুল)
শামিউল আমিন শান্ত
মূলতঃ নড়াইল জেলার এই মানব গোষ্টির বিশেষ কোনো পৃথক সত্ত্বা নেই। এদের সকলেই বহুকাল ধরে বিভিন্ন জাতির সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। প্রাক- আর্য নরগোষ্টির দ্রাবিড় জাতি এবং পরের আর্য জাতির নর গোষ্টির ক্ষীণতম রক্তের ধারা কোন কোন স্থানে কিছু থাকলেও থাকতে পারে। আর্যপূর্ব নরগোষ্ঠি মূলতঃ নেগ্রিটো, অষ্ট্রিক (নিষাদ), দ্রাবিড় ইত্যাদি ছিল। অষ্ট্রিক গোষ্ঠি থেকে বাঙ্গালী জাতির বড় অংশের উদ্ভব বলে নৃ-তাত্তিকগন মনে করেন। আজ থেকে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার বছর পূর্বে ইন্দোচীন হতে আসাম হয়ে এতদঞ্চলে প্রবেশ করে। যেমন (১৯৮৩) সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলাকালীন সময়ে লোহাগড়া উপজেলায় আসামীজ মেয়েরা সন্তানাদি নিয়ে প্রবেশ করেছিল। এরা কোল, ভীল, সাওতাল, মুন্ডা, হো প্রভৃতি উপজাতীয়দের পূর্ব পুরুষ হিসেবে চিহ্নিত। বাঙ্গালী রক্তে এদের প্রভাব সুস্পষ্ট। বাংলা শব্দ ভান্ডারে সংস্কৃতিতে এরা গভীর প্রভাব বিস্তার করেছে। অষ্ট্রিক জাতির পরে এখানে আসে দ্রাবিড় জাতি। এদের সভ্যতা উন্নত বলে অষ্ট্রিক জাতিকে গ্রাস করে ফেলে। নৃতাত্ত্বিকদের মতে এতদঞ্চলের যে সমস্ত বাঙ্গালীরা বসবাস করে তাদের রক্তধারায় দ্রাবিড় প্রভাব সু্স্পষ্ট।
অষ্টম শতাব্দীর পর আরবদের ইসলাম প্রচার ও ব্যবসা-বানিজ্যের মাধ্যমে বাঙ্গালী জাতির সাথে মিশ্রণ ঘটে। মূলতঃ বর্জন ও রূপান্তরের মাধ্যমে নড়াইল জেলা তথা বাংলাদেশী জনজীবন গড়ে উঠেছে। বৃহত্তর বাঙ্গালী জাতির অংশরূপে অষ্ট্রিক দ্রাবিড়, আর্য, মঙ্গলীয়, সেমেটিক, হেমেটিক প্রভৃতি জনগোষ্ঠীর রক্তধারার সংমিশ্রণে গঠিত এই জেলার অধিবাসী। তাই কালো-ধলা, বেটে-লম্বা-মাঝারী, কটাচুল-কালোচুল, সোজাচুল-বাকাচুল সকল প্রকারের মানুষই এই জেলায় পরিদৃষ্ট হয়। কথ্য ভাষার শ্রেণী বিন্যাসে নদীয়া ও শান্তপুরী ভাষার অপেক্ষাকৃত অনুন্নত ভাষার বৈশিষ্ট্য এখানে পরিলক্ষিত হয়। আবার এই জেলার গা ঘেষে প্রবাহমান মধুমতি নদীর পূর্ব পাড়ের ফরিদপুরী ভাষার সাথেও এর ব্যতিক্রম দেখা যায়।
তথ্য সূত্র :
নড়াইল জেলার অতীত ও বর্তমান
লেখক : আকরামুজ্জামান মিলু
সম্পাদনা :
মো: হাসানূজ্জামান (বিপুল)
শামিউল আমিন শান্ত