
Home ঐতিহ্য (Tradition) > মেলা ও নাম যজ্ঞ
এই পৃষ্ঠাটি মোট 86760 বার পড়া হয়েছে
Mela and Namm Joggo
মেলা
মিলন হইতে মেলা শব্দের উৎপত্তি। যশোরের বিভিন্ন স্থানে পূজা পার্বন উপলক্ষে মেলা বসে। বিশেষ করিয়া শারদীয়া দূর্গা পূজা, কালীপূজা ও নীলপূজা উপলক্ষে অধিক সংখ্যাক মেলা থাকে। কোথাও কোথাও কবিগান, ভাবগান, যাত্রাভিনয়, থিয়েটার ও বিচিত্রানুষ্টানও হইয়া থাকে। বৎসরের বিশেষ তিথি অনুসারে স্মান উপলক্ষেও বহু স্থানে মেলা বসে। যশোরের যে সমস্ত মেলার নাম শুনা যায় তাহার মধ্যে আফরার মেলা সমধিক বিখ্যাত। পৌষ সংক্রান্তিতে ত্রিবেণী সঙ্গমে আফরা নামক স্থানে এই মেলা বসে। প্রায় লক্ষাধিক ভক্তের সমাবেশ ঘটে এই মেলার। ত্রিবেণী সঙ্গমে পূণ্য স্নান করিবার উদ্দেশ্যেই সকলে এখানে আসেন। এই স্থানটি সিঙ্গিয়া রেল ষ্টেশন হইতে পূর্বদিকে প্রায় আড়াই মাইল দূরে অবস্থিত। লোক পরস্পরায় জানা যায় যে শ্রীধরপুরের জমিদার সাধক হেমেন্দ্র কুমার বসু একরাত্রে স্বপ্নদিষ্ট হন যে পৌষ সংক্রান্তির দিনে ভুবনেশ্বরী দেবীর মন্দির হইতে নামকীর্ত্তন সহযোগ গিয়া আফরার চিত্রা ও ভৈরব নদের সংগমস্থনে স্নানান্তে গঙ্গাপূজা করিলে পুণ্য সঞ্চয় হইবে। তিনি অতঃপর বাংলা ১৩৩০ সালে শেখাটির অবিনাশ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কেশবলাল রায় চৌধুরী, হীরালাল রায় চৌধুরী প্রভৃতি ব্যক্তিগণের সহযোগে এই স্বপ্নাদিষ্টা ধর্মানুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। তদবধি প্রতি বৎসর এই স্থানে স্নান ও পূজার প্রবর্তন হয় এবং এতদুপলক্ষে মেলা বসে। এতদ্ব্যতীত নড়াইল গোবরার নিকট কুলাইতলা গ্রামে চিত্রা নদীর ধারে বৈশাখী মেলা কুরিগ্রামে নিশিনাথ তলার মেলা, শামান্দার তলার মেলা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
নামযজ্ঞ
যুগাবতার শ্রীচৈতন্য দেব প্রবর্তিত ভগবৎ আরাধনার প্রেমভক্তি নিবেদনের সহজ পদ্ধতি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাম কীর্তনকেই নামযজ্ঞ বলে। যশোরের পরম ভক্ত শ্রীব্রহ্মহরি দাস ঠাকুর এবং শ্রীচৈতন্য দেবের অন্যান্য পার্শ্বচর যশোরে নামযজ্ঞের প্রবর্তন করেন। আজিও শ্রীচৈতন্য দেবের শিষ্যগণ যাহাদের বৈষ্ণব বলিয়া আখ্যায়িত করা হয় তাহারা চতুসপ্রহর, অষ্টপ্রহর এবং কোথাও কোথাও ষোল প্রহর ধরিয়া নামযজ্ঞের আয়োজন করেন। ভক্তগণ খোল, করতাল এবং অন্যান্য বাদ্য যন্ত্র সহযোগে মধুর সুরে অবিরামভাবে ভগবানের নামগান করিয়া প্রতিটি মানুষের মনে ভক্তির প্রবাহ সৃষ্টি করেন।
তথ্য সূত্র :
যশোরে হিন্দু ধর্মের ঐতিহ্য
লেখক : শ্রীতারাপদ দাস
সর্বশেষ আপডেট :
১৪.০৫.১১